পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেছেন, হাতি রক্ষার দায়িত্ব আমাদের সকলের। কিন্তু আমরা সকলে হাতি বাঁচাতে ব্যর্থ হয়েছি। সেই ব্যর্থতার দায়িত্ব আমাদের নিতে হবে। তাই এ বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়াতে বনবিভাগের কর্মীদের আরও সক্রিয় হতে হবে।
মঙ্গলবার চট্টগ্রামের রুবী গেইট এলাকায় ফরেস্ট একাডেমিতে ৩৮তম বিসিএসের মাধ্যমে বন ক্যাডারের নিয়োগপ্রাপ্ত সহকারী বন সংরক্ষকদের দুই মাসব্যাপী ওরিয়েন্টেশন কোর্স এর সমাপনী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) সঞ্জয় কমার ভৌমিক, বন অধিদপ্তরের উপপ্রধান বন সংরক্ষক (শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ উইং) মো. মাঈনুদ্দিন খান এবং চট্টগ্রাম ফরেস্ট একাডেমির পরিচালক মো. ছানাউল্যা পাটওয়ারী। অনুষ্ঠানে মন্ত্রী ২১ জন নবনিযুক্ত সহকারী বন সংরক্ষকদের মাঝে সনদপত্র ও মেধা তালিকায় স্থান প্রাপ্তদের ক্রেস্ট বিতরণ করেন।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেন, হাতি রক্ষায় জনসচেতনতা বাড়াতে হবে। হাতি যদি ফসলের ক্ষতি করে, তার ক্ষতিপূরণ সরকার দিচ্ছে। তাহলে কেন সে হাতি মারবে? হাতি আমাদের মৌলভীবাজার এলাকাতেও আছে। ১৫-২০টা বন্য হাতি এক মাস যাবত আছে। ধান ক্ষেতে হাতি নেমে ধান খেয়ে নেয়। লোকজন আমাদের বলে হাতি ধান খেয়ে নিচ্ছে। কিন্তু তারপরও তো হাতি মারে না।
তিনি বলেন, ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা নিচ্ছি। মন্ত্রণালয় নিচ্ছে। মানুষকে একটু বুঝিয়ে বলা, ফসলের ক্ষতি করলে সে ক্ষতিপূরণ সরকার দিচ্ছে। আপনারা হাতি মারবেন না। হাতি মারলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিব।
মো. শাহাব উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশের জীববৈচিত্র ও সকল প্রাণী রক্ষার দায়িত্ব বন বিভাগের। বন বিভাগের সবাইকে দায়িত্ব নিতে হবে। আপনার এলাকায় যদি একটি বন্যপ্রাণী মারা যায় তাহলে দায়িত্ব সকলের। যে এলাকায় বন্যপ্রাণী মারা যাবে তার দায়িত্ব সেখানকার ফরেস্ট গার্ড থেকে শুরু করে ডিএফও এবং সিএফও’র দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাসহ সবাইকে নিতে হবে।
প্রসঙ্গত, বন বিভাগের হিসাবে, দেশে স্থায়ীভাবে বসবাসরত হাতির সংখ্যা ২৬৮টি। এছাড়া ভারত ও মিয়ানমার থেকে দেড় শতাধিক হাতি বিভিন্ন সময়ে যাওয়া-আসা করে। গত ৩০ বছরে দেশে হাতি মারা গেছে ১৪২টি। এর মধ্যে ২০২০ সালে ২২টি, ২০২১ সালে ১১টি। শুধু চলতি বছরের নভেম্বর মাসেই মারা মারা যাওয়া হাতির সংখ্যা আটটি। হাতি যেন ফসল মাড়িয়ে নষ্ট না করতে পারে, সেজন্য ক্ষেতে বৈদ্যুতিক তারের ফাঁদ তৈরি করেন স্থানীয়রা। এরকম তারে জড়িয়ে মৃত্যুর পাশাপাশি বিভিন্ন সময়ে গুলি করে হত্যার ঘটনাও ঘটেছে। আবাস সঙ্কুচিত হওয়ায় খাবার নিয়ে হাতি আর মানুষের দ্বন্দ্বে একের পর এক এমন মৃত্যু এ প্রাণিটির জীবনযাত্রাকে আরও বেশি হুমকির মুখে ফেলছে।
বিডি প্রতিদিন/এএম