চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ২০২১ সালে মোট অজ্ঞাত রোগী চিকিৎসা নিয়েছিল ৩৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২০ জন, মহিলা ৬ জন, যুবক ৫ জন এবং কিশোরী ৩ জন। কিন্তু ২০২২ সালে অজ্ঞাত রোগী ছিল ৪৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২৭ জন, মহিলা ১৩ জন, নবজাতক শিশু ২ জন এবং কিশোর ৫ জন। তাছাড়া প্রতিনিয়তই ১ থেকে তিনজন পর্যন্ত অজ্ঞাত রোগী ভর্তি থাকে চমেক হাসপাতালে।
অজ্ঞাত রোগী বাড়লেও তাদের চিকিৎসায় সরকারি কোনো ব্যবস্থাপনা নেই। হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা ও কিছু ওষুধ মিললেও অনেক সুবিধাবঞ্চিত থাকে। তবে কোনোভাবে চমেক হাসপাতালে আনা হলে অজ্ঞাত রোগীর বন্ধু খ্যাত প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম নেসারের উদ্যোগে তাদের প্রয়োজনীয় সেবা দেয়া হয়। কখনো স্বজনের খোঁজ মিলে, কখনো মিলে না। তাছাড়া চিকিৎসাধীন অবস্থায় কোনো স্বজন না থাকায় রোগীর সেবা, ড্রেসিং, ওষুধের ব্যবস্থা করা, চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলা, রোগী ফলোআপ চিকিৎসার ব্যবস্থা করাসহ নানা সমস্যায় পড়তে হয় অজ্ঞাত রোগীদের।
জানা যায়, চমেক হাসপাতালে নেসারের উদ্যোগে অজ্ঞাত রোগীর জন্য নানা সেবা দেয়া হচ্ছে। এর মধ্যে আছে রোগীর জন্য বিশেষ নতুন পোশাক, অজ্ঞাত রোগীর সেবায় ২৮ ও ২৫ নং ওয়ার্ডে বিশেষ মেডিসিন কর্নার চালু, জরুরি মেডিসিন প্রদান, শীতের সময় কম্বল প্রদান, রোগ নির্ণয়ে সহযোগিতা, অজ্ঞাত রোগীদের সেবায় কেয়ার গিভার এবং অজ্ঞাত রোগী শনাক্তে বায়োমেট্টিক সিস্টেম চালুসহ নানা সুবিধা।
অজ্ঞাত রোগীর সেবক খ্যাত প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম নেসার বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর অজ্ঞাত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। তাছাড়া প্রতিনিয়তই এক থেকে তিনজন পর্যন্ত অজ্ঞাত রোগী ভর্তি থাকে। সড়ক দুর্ঘটনাসহ বিভিন্ন ঘটনার প্রেক্ষিতে রোগীরা হাসপাতালে আসে। হাসপাতালে তাদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়। তিনি বলেন, বর্তমানে পিবিআই অজ্ঞাত রোগী বায়োমেট্রিক মেশিনের মাধ্যমে শনাক্ত করে। কিন্তু তা সময় সাপেক্ষ এবং কিছু আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে হয়। তবে প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এ ব্যবস্থাটি হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির তত্ত¡াবধানে করলে দ্রুতই শনাক্ত করা সম্ভব হত। একই সঙ্গে অজ্ঞাত রোগীদের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজেও যদি এ সব সেবা চালু করা যায়, তাহলে মানুষ উপকৃত হত।
জানা যায়, ২০০৭ সাল থেকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অজ্ঞাত রোগী নিয়ে কাজ করছেন নেসার। ইতোমধ্যে প্রায় এক হাজার অজ্ঞাত রোগীর সেবা এবং প্রায় ৫০০ জন অজ্ঞাত রোগীর পরিচয় শনাক্ত করে পরিবারের হাতে তুলে দেয়া হয়। বর্তমানে প্রতিনিয়তই দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোতে অজ্ঞাত রোগী ভর্তি হচ্ছে। তাই হাসপাতালে আসা অজ্ঞাত রোগীদের সেবায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাপনা থাকলে তাদের উপকার হত বলে মনে করেন অজ্ঞাত রোগীর সেবক।
বিডি প্রতিদিন/এএম