দিনকাল ভালো যাচ্ছে না পপির। হাতে কোনো কাজ নেই। আর্থিক কষ্টে অলস সময় কাটছে তার। ২০১২ সালে মুক্তি পায় পপির সর্বশেষ চলচ্চিত্র 'গার্মেন্ট কন্যা'। নাজিমউদ্দীন চেয়ারম্যান প্রযোজিত এই চলচ্চিত্রটি ব্যবসায়িকভাবে সফল হলে এই প্রযোজকের বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রে চুক্তিবদ্ধ হন তিনি। কিন্তু এগুলোর কাজ আর শুরু হয়নি। গত বছর নাজিম চেয়ারম্যান মারা গেলে এসব ছবির কাজ একেবারেই অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। মাঝে দু'একজন নির্মাতার ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হলেও সে গুলোর মধ্যে কয়েটির কাজ শুরু হয়নি এবং শুরু হওয়া গুলো শেষ হয়নি।
নির্মাতাদের কথায়, পপি নিজের দোষেই নিজে চিত্র জগত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। কারণ 'গার্মেন্ট কন্যা' ব্যবসা সফল হলে অস্বাভাবিক হারে পারিশ্রমিক হাঁকতে শুরু করেন। পপি যার হাত ধরে চিত্র জগতে এসেছিলেন সেই প্রখ্যাত চিত্রনির্মাতা মনতাজুর রহমান আকবর গত বছর পপিকে নিয়ে একটি ছবির কাজ শুরু করতে চাইলে মাত্রাতিরিক্ত পারিশ্রমিক চান তিনি। এতে মনক্ষুণ্ন হয়ে পপির বাসা থেকে বেরিয়ে যান এই নির্মাতা। এ খবর চলচ্চিত্র জগতে ছড়িয়ে পড়লে অন্য নির্মাতারা তাকে অকৃতজ্ঞ আখ্যা দেন এবং চলচ্চিত্র জগত থেকে মৌখিকভাবে বহিষ্কার করেন।
এ বিষয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে পপি বলেন, সব কিছুর দাম বাড়ছে। তাই সঙ্গত কারণেই আমার পারশ্রমিক বাড়াতে হবে, এতে তো দোষের কিছু দেখছি না। এর জবাবে নির্মাতারা বলেন, পপির বয়স বেড়েছে। তাই নায়িকা হিসেবে তার চাহিদাও কমেছে। তারপরেও তাকে নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু এই বয়সে এসে ভাব দেখালে তাকে তো বেকারই থাকতে হবে।
হাতে কাজ নেই কেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে পপি বলেন, আমি বেছে বেছে কাজ করি। তাই যেনতেন গল্প আর নির্মাতার কাজ করি না বলেই হাতে তেমন কাজ নেই। এর জবাবে নির্মাতারা বলেন, তাকে যখন কেউ কাজেই নিচ্ছে না তখন আবার বাছ-বিচারের কথা আসে কোথা থেকে। তারা আরও বলেন, তিনবার জাতীয় পুরস্কার পাওয়া এই অভিনেত্রী নীতি ঠিক রেখে কাজ করে গেলে এখনও অভিনয়ে নিয়মিত থাকতে পারতেন। একদিকে পারিশ্রমিক বৃদ্ধি অন্যদিকে নির্মাতাদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ এবং বারবার প্রেমঘটিত কারণে দর্শক-নির্মাতার আস্থা হারিয়েছেন তিনি।
অভিনয়ের শুরুতেই নায়ক শাকিল খানকে গোপনে বিয়ে ও পরে এ খবর ফাঁস হলে ডিভোর্সের ঘটনায় তার ক্যারিয়ারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। এরপরেও বিভিন্ন সময় নানা জনের সঙ্গে তার গোপন সম্পর্কের খবর প্রকাশ হলে চিত্রজগতে নিজের সম্পর্কে বাজে ধারণার জন্ম দেন পপি। বর্তমানে গ্রামের বাড়ি খুলনার বিবাহিত এক ডাক্তারকে গোপনে বিয়ে করেছেন বলে তার নামে খবর চাউর হয়েছে। যদিও পপি বলছেন সবই গুজব। একই সঙ্গে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পরিবারের সবার ভরণ-পোষণের দায়িত্ব আমারই ঘাড়ে। ঘরে নিয়মিত রান্না হচ্ছে কিনা সে খবর কেউ রাখে না। অথচ আমার ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে সবাই অহরহ নাড়াচাড়া করে। এটি সত্যিই দুঃখজনক। একটি সূত্র জানায় অসচ্ছল অবস্থায় ইস্কাটনের একটি ভাড়া বাড়িতে মা, ভাই, বোন নিয়ে কষ্টে দিনাতিপাত করছেন অভিনেত্রী পপি।