এবার ঢাকার ছবিতে অভিনয় করবেন পাওলি দাম, দেব, জিৎ, রোহিনীসহ আরও অনেক টালিগঞ্জের শিল্পী। নির্মাণ হবে একাধিক যৌথ প্রযোজনার ছবি। চলচ্চিত্র বোদ্ধাদের মতে- ঢাকা ও কলকাতা হচ্ছে আশা-ভাষা আর সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য সূত্রে গাথা দুই শহর। একই ভাষায় কথা বলায় এপার আর ওপার বাংলার মানুষের হৃদ্যতার ইতিহাস পুরনো। বিশেষ করে একে অপরের সাহিত্য-সংস্কৃতির লালনে অনেকদূর এগিয়েছে বহু আগে। তাই তো স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম যৌথ প্রযোজনার ছবি নির্মাণ হয় কলকাতার সঙ্গে। ১৯৭৪ সালে নির্মিত এই ছবির শিরোনাম 'পালংক'। টালিগঞ্জের প্রখ্যাত চিত্রনির্মাতা রাজেন তরফদারের পরিচালনায় এ ছবির প্রধান চরিত্র মকবুলের ভূমিকায় অভিনয় করেন ঢাকার চলচ্চিত্রের মুকুটহীন নবাব খ্যাত অভিনেতা আনোয়ার হোসেন। তার সহশিল্পী ছিলেন কলকাতার বিশিষ্ট অভিনেত্রী সন্ধ্যা রায়। অন্য একটি প্রধান ভূমিকায় অভিনয় করেন কলকতার উৎপল দত্ত। তারপর দীর্ঘ ৪০ বছরে দুই বাংলার প্রায় অর্ধশতাধিক যৌথ আয়োজন ছাড়াও দুই দেশের শিল্পীরা একে অন্যের দেশের ছবিতে অভিনয় করেছেন অসংখ্যবার। অস্কার জয়ী ভারতের কালজয়ী নির্মাতা সত্যজিৎ রায়ের বিখ্যাত চলচ্চিত্র 'অশনি সংকেত'র প্রধান চরিত্র অনঙ্গ বউ'র ভূমিকায় অভিনয় করেছেন আমাদের নায়িকা ববিতা। ঢাকার নায়ক ফেরদৌসকে তো দুই বাংলার শিল্পীই বলা হয়। একই ভাবে টালিগঞ্জের ঋতুপর্ণা যেন ঢালিউডেরই মেয়ে। কথায় আছে আশা-ভাষা আর সংস্কৃতিকে কখনো কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে সীমিত করা যায় না। তাই তো প্রতিক্রিয়াশীলদের নানা অপতৎপরতা সত্ত্বেও দুই বাংলার চলচ্চিত্রের মেলবন্ধন এখনো অটুট আছে। তাই এখনো দুই বাংলার যৌথ প্রযোজনা কিংবা এপার বাংলার শিল্পীরা ওপার বাংলায় আর ওপার বাংলার শিল্পীর এপার বাংলার চলচ্চিত্রে কাজ করা অব্যাহত আছে এবং থাকবে। এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি ঢাকায় এসে যৌথ প্রযোজনার 'আমি শুধু চেয়েছি তোমায়' ছবিতে কাজ করে গেলেন টালিগঞ্জের শুভশ্রী ও অংকুশ। শীঘ্রই আসছেন জিৎ, পাওলি দাম, রোহিনী, দেবসহ অনেকে। জিৎ অভিনয় করবেন শাকিব প্রযোজিত একটি এবং অনন্য মামুন পরিচালিত আরেকটি ছবিতে। পাওলি দাম থাকছেন হাসিবুর রেজা কল্লোলের 'সত্তা' ছবিতে। এতে তার বিপরীতে থাকবেন ঢালিউডের শীর্ষ নায়ক শাকিব খান। মিস কলকাতা খ্যাত রোহিনী কাজ করবেন উত্তম আকাশের 'ঢাকার ছেলে কলকতার মেয়ে' ছবিতে। এতে রোহিনীর নায়ক শাকিব খান। দেব অভিনয় করবেন শাকিব খান প্রযোজিত যৌথ প্রযোজনার একটি ছবিতে। তা ছাড়া শীঘ্রই আদান-প্রদানের ভিত্তিতে দুই বাংলায় ছবি বিনিময় শুরু হচ্ছে। এভাবেই দুই বাংলার চলচ্চিত্রের বেড়ে ওঠা আবেগ আর সম্পর্কের তালিকা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হতেই থাকবে।