মিয়া আলাউদ্দিন [সা. সম্পাদক, প্রদর্শক সমিতি]
দর্শক এখন শুধু ভালো পরিবেশে ছবি দেখতে চায় না। ভালো ছবিও চায়। দীর্ঘদিন ধরে ভালো ছবির অভাবে প্রেক্ষাগৃহ বিমুখ হয়ে আছে দর্শক। নির্মাতারা কোনোভাবেই মানসম্মত ছবি দিতে পারছেনা। মাঝেমধ্যে দু-একটি ভালো ছবি দিলে চলবে না। এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে। কারণ এমনিতেই প্রেক্ষাগৃহ মালিকরা লোকসান গুনছে। তার উপর ধারদেনা করে সিনেপ্লেক্স নির্মাণ করলে ভালো ছবির অভাবে দেনার দায়ে তাদের দেউলিয়া হতে হবে।
খোরশেদ আলম খসরু [সাবেক সি. সভাপতি, প্রযোজক সমিতি]
সিনেপ্লেক্সছাড়া চলচ্চিত্র ব্যবসা ধরে রাখা যেমন সম্ভব নয় ঠিক তেমনি ভালো ছবি না থাকলে সিনেপ্লেক্স নির্মাণ করেও কোনো লাভ নেই। এতে চলচ্চিত্র ব্যবসার আরও অবনতি ঘটবে। বর্তমানে সিনেপ্লেক্স ও মানসম্মত ছবি উচ্চাভিলাষ নয়, বাস্তবতা। চলচ্চিত্রের উন্নয়নে এ বাস্তবতাকে অনেক আগেই মেনে নেওয়া উচিত ছিল। তাহলে এদেশের চলচ্চিত্র ব্যবসায় ধস নামত না।
শহীদুল ইসলাম খোকন [সভাপতি.পরিচালক সমিতি] চলচ্চিত্র ব্যবসার উন্নয়নে সিনেপ্লেক্স ও ভালো ছবির কোনো বিকল্প নেই। ভালো ছবি না পেলে প্রেক্ষাগৃহ মালিকরা ব্যবসা টিকিয়ে রাখবে কীভাবে। তাই আগে ভালো ছবি নির্মাণ হতে হবে। ভালো ছবি পেলে দর্শক প্রেক্ষাগৃহে ছুটে যাবেই। এর প্রমাণ ৭০, ৮০ ও ৯০ দশকের প্রথম দিকের চলচ্চিত্রগুলো। ভালো ছবি পেলে প্রেক্ষাগৃহ মালিকরাও স্বীয় ব্যবসার স্বার্থে নিজেরাই সিনেপ্লেক্স নির্মাণ করবে।
সোহানুর রহমান সোহান [সি. সহসভাপতি, পরিচালক সমিতি] দর্শক এখন শুধু সিনেমা দেখতে চায় না। একই সঙ্গে শপিং,খাওয়া দাওয়া, বাচ্চাদের খেলাধুলার ব্যবস্থা চায়। এর প্রমাণ স্টার সিনেপ্লেক্স। তাই সিনেপ্লেক্সে সংখ্যা বাড়াতে পারলে একটি ছবিতে কমপক্ষে ১০ কোটি টাকা ব্যবসা হবে। এক্ষেত্রে সরকারি সহযোগিতা জরুরি। সরকার যদি নামমাত্র সুদে ১০ বছরের জন্য এক্ষেত্রে ব্যাংক লোন দেয় তাহলে চলচ্চিত্র শিল্প বেঁচে যাবে। পাশাপাশি ভালো ছবি নির্মাণে সরকারি অনুদানের অর্থের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে হবে।
আবু মুসা দেবু [সভাপতি. এডিটরস গিল্ড]
যুগ ও প্রযুক্তির সঙ্গে তাল না মেলালে অগ্রগতি সম্ভব নয়। যার প্রমাণ চলচ্চিত্র শিল্প। এ ক্ষেত্রে আমরা পিছিয়ে আছি। দর্শক সিনেমা দেখতে চায়। কিন্তু ভালো ছবি ও পরিবেশের অভাবে তারা প্রেক্ষাগৃহে যেতে পারছে না। সিনেপ্লেক্স ও ভালো ছবি নির্মাণে সরকারি সহযোগিতা দরকার। সরকারকে সহজ শর্তে লোন দিতে হবে যাতে মাল্টিপ্লেক্স গড়ে তোলা এবং ভালো ছবি নির্মাণ করা যায়।
শাকিব খান [সভাপতি. শিল্পী সমিতি]
এখন বিশ্বজুড়ে সিনেপ্লেক্স কালচার চলছে। সিনেমা হচ্ছে আয়েশি বিনোদন। দর্শক একই সঙ্গে সিনেমা দেখা, শপিং করাসহ সব আনন্দ-বিনোদন একসঙ্গে পেতে চায়। কিন্তু তাই বলে শুধু সিনেপ্লেক্স নির্মাণ নয়, মানসম্মত ছবিও চাই। কারণ ভালো ছবি না পেলে দর্শক সিনেপ্লেক্স যাবে কেন? এ জন্য সরকারি সহযোগিতা অপরিহার্য। সরকার সিনেপ্লেক্স নির্মাণে ঋণ দেবে এবং অনুদান ব্যবস্থা রোধ করে ছবিকে করমুক্ত করবে অথবা অনুদানের অর্থ সময় উপযোগী করবে অর্থাৎ অর্থের পরিমাণ বৃদ্ধি করবে। কারণ বর্তমানে প্রতি ছবির জন্য দেওয়া ৩৫ লাখ টাকা দিয়ে কোনোভাবেই একটি ভালো চলচ্চিত্র নির্মাণ সম্ভব নয়।