বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে বাইরে থেকে বাড়ি ফেরেন ওম পুরী। অ্যালকোহল পান করেছিলেন একটু বেশি মাত্রায়ই। চেয়েছিলেন ছেলে ইশান্তের সঙ্গে দেখা করতে। হয়ত ভেতরে ভেতরে কোন ইঙ্গিত পাচ্ছিলেন তিনি। ফোনও করেছিলেন ছেলেকে। কিন্তু হয়নি দেখা। শুক্রবার সকালে আসে তার মৃত্যুর খবর।
শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) সকালে মুম্বাইয়ের বাসভবনে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ভারতের শক্তিমান অভিনেতা ওম পুরী। এর আগের রাতে ঘরে ফেরার আগ পর্যন্ত ছিলেন চলচ্চিত্র পরিচালক খালেদ কিদওয়াই- এর সঙ্গে। বিকেল সাড়ে ৫টা থেকে রাত প্রায় সাড়ে ১১টা পর্যন্ত তারা দু'জন একসঙ্গে ছিলেন। রাতে ওমকে বাসায় পৌঁছে দেন খালেদ। শুক্রবার সকাল ৯টায় ভিসা আনতে দূতাবাসে যাওয়ার কথা ছিল ওমের। ভোরে বাসায় ফোন দিয়ে কাউকে না পেয়ে ওম পুরীর গাড়িচালককে ফোন দেন খালেদ। এরপরেই শুনতে পান অভিনেতার মৃত্যুর সংবাদ।
বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাতকারে খালেদ কিদওয়াই বলেন, বৃহস্পতিবার পুরীর ফ্ল্যাটে বিকেলে গিয়েছিলেন কিদওয়াই। সেখানে কিছু কাজ সেরে একটি অনুষ্ঠানে এক সঙ্গেই গিয়েছিলেন দু'জনে। নিজের গাড়িতেই ওম পুরীকে নিয়ে গিয়েছিলেন কিদওয়াই।
সেখানে হাজির অন্য কয়েকজনের সঙ্গে গল্প করতে করতেই একটু মাথা গরম করে সেই বাড়ি থেকে কিদওয়াইকে সঙ্গে নিয়ে বেরিয়ে যান ওম পুরী। মাঝে হঠাৎই তার ইচ্ছে হয় ছেলে ঈশান্তের সঙ্গে দেখা করার। পুরীর দ্বিতীয় স্ত্রী ছেলে ঈশান্তকে নিয়ে আলাদা থাকেন।
ছেলের ফ্ল্যাটের কাছে পৌঁছে ঈশান্তকে ফোন করে বাড়ি আসতে বলেন ওম পুরী। ছেলে ততক্ষণে সেই অনুষ্ঠানে চলে গিয়েছিল, যেখান থেকে কিছুক্ষণ আগে রাগ করে বেরিয়ে এসেছেন ওম পুরী।
কিদওয়াই বলেন, "বেশ ইমোশানাল হয়ে পড়েছিলেন ওম পুরী। বেশ পানও করেছিলেন। ওই ফ্ল্যাটে গিয়েও আরও এক পাত্র পাণীয় ঢেলে নেন নিজের জন্য। নিষেধ করেছিলাম আমি, কিন্তু উনি বললেন ছেলে ফেরার জন্য অপেক্ষা করতে করতে এটা খাব। ততক্ষণে যদি ও না ফেরে, তাহলে চলে যাব বাড়ি।
"রাত প্রায় এগারোটা পর্যন্ত ছেলে ওই পার্টি থেকে আসেনি। তখন পুরীকে নিয়ে বেরিয়ে পড়ি, বলি- চলুন এবার রাতের খাবার খেয়ে নেওয়া যাক। উনাকে বাড়িতে পৌঁছে দিই যখন, তখন প্রায় সাড়ে এগারোটা বাজে।"
নিজের বাড়িতে ফিরে গাড়ি পার্ক করার সময়ে কিদওয়াই খেয়াল করেন যে, ওম পুরী নিজের টাকার পার্সটা গাড়িতেই ফেলে গেছেন। অত রাতে আর ফোন করে বিরক্ত করেননি অভিনেতাকে।
কিদওয়াই বলেন, "আজ সকালে সাড়ে ছটায় ফোন করেছিলাম। কিন্তু কেউ ফোন তোলেনি। ভিসা নেওয়ার জন্য যে উনি দূতাবাসে যাবেন ৯টায়। তাই উনার গাড়িচালককে ফোন করি আমি। সে জানায় সকাল সাতটায় পুরীর ফ্ল্যাটে পৌঁছে যাবে সে। আর যাওয়ার পথে আমার এখান থেকে ঘুরে যাবে, টাকার পার্সটা নিয়ে নেবে সে। আমি তারপরে জেগেই ছিলাম। সকাল আটটা নাগাদ গাড়ির চালকের ফোন পাই। তখনই খবরটা জানতে পারলাম,"। সূত্র: বিবিসি
বিডি-প্রতিদিন/এস আহমেদ