ইরাক ও সিরিয়াভিত্তিক ইসলামিক স্টেট (আইএস)-এর এবার লক্ষ্য ভারতের পশ্চিমবঙ্গ। দেশটির কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের মতে, অল্পবয়সী যুবকদের নানা বাহানায় আইএস তাদের নিজেদের দলে টানতে পশ্চিমবঙ্গের চেয়ে ভাল জায়গা আর নেই। জেহাদি কর্মকাণ্ড ছড়াতে আইএস কেবলমাত্র ইন্টারনেট কিংবা টুইটারের মতো সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোর ওপরেই নির্ভর করে নেই, বরং এই যুবকদের নিয়োগ করতে পশ্চিমবঙ্গের সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে এই সন্ত্রাসী সংগঠনটি তাদের লোক পাঠিয়েছে বলে খবর।
ভারতের কোন কোন জায়গায় আইএস প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করছে সে ব্যাপারে সম্প্রতি দেশটির কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বিভাগের সাইবার সেল একটি জরিপ করে। সেই জরিপেই দেখা যায় সন্ত্রাসীদের মানচিত্রে দ্রুত উঠে আসছে পশ্চিমবঙ্গের নাম।
আইএস সংগঠনটি অল্পবয়সী যুবকদের নিজেদের সংগঠনে অন্তর্ভুক্ত করতে দেশটির যে জায়গাগুলো তাদের বেশি পছন্দ তার মধ্যে শ্রীনগর, গুয়াহাটি, পুনের পিম্পরি-চিঞ্চওয়াড়’এর পরেই ৪ নম্বরে আছে পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া জেলা। এই জেলার ১৬ থেকে ৩০ বছর বয়স্ক যুবকরাই মূলত অনলাইনের মাধ্যমে আইএস-এর আদর্শে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে বলে খবর।
যুবকদের আকৃষ্ট করতে এই সন্ত্রাসী সংগঠনটি কেবলমাত্র বাংলাতেই তাদের প্রচার চালায়নি বরং গত দুই মাস ধরে নিজেদের প্রচার বাড়ানোর জন্য নদীয়া এবং মুর্শিদাবাদ জেলার সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোতেও প্রচুর আইএস পোস্টারও আটক করেছে গোয়েন্দারা।
যদিও জেলা পুলিশ বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে চায়নি। তবে সূত্রে খবর সীমান্তবর্তী গ্রামগুলো থেকে প্রায় ১৪৭টি আইএস পোস্টার উদ্ধার করা হয়েছে। এরমধ্যে মুর্শিদাবাদ জেলা থেকে ১১টি এবং নদীয়া জেলা থেকে ৬টি আইএস পোস্টার উদ্ধার করেছে পুলিশ। এই পোস্টারগুলোতে ভারতে বসবাসকারী মুসলিমদের জন্য পৃথক ‘মুঘলস্থান’ রাজ্য গঠনের ডাক দেওয়া হয়েছে।
দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রালয় ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারকে সতর্ক করেছে। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য যে ক্রমশ সন্ত্রাসবাদীদের মুক্তাঞ্চল হয়ে উঠছে এ বিষয়ে সম্প্রতি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংও। কিন্তু সতর্কবার্তা সত্ত্বেও রাজ্যে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের ওপর লক্ষ্য রাখতে এখনও পর্যন্ত কোন সাইবার সেল গঠন করে উঠতে পারেনি রাজ্য সরকার।
গত একবছরের বেশি সময় ধরে ভারতে তাদের প্রভাব বাড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছে আইএস সন্ত্রাসী সংগঠন। গোয়েন্দারা বলছেন, এদেশে আইএস এখনও বড় আঘাত হানতে পারেনি। তাছাড়া ভারত থেকে হাতে গোনা মাত্র কয়েকজন মুসলিম যুবক এই সংগঠনে যোগ দিয়েছে। কিন্তু তার পরেও বিষয়টি নিয়ে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা।
বিডি-প্রতিদিন/২৩ নভেম্বর, ২০১৫/মাহবুব