পর্দা শব্দটি বাংলা। আরবিতে বলা হয় হিজাব। যার আবিধানিক অর্থ আবরণ, আচ্ছাদন, অন্তরাল বা ঢেকে রাখা। ইসলামী পরিভাষায় প্রাপ্ত বয়স্ক নারী-পুরুষ প্রত্যেকের জন্য নির্দিষ্ট অঙ্গ-প্রত্যঙ্গসমূহ আচ্ছাদিত করার নামই পর্দা বা হিজাব। সাধারণ অর্থে পর্দা বলতে বেগানা পুরুষ বা বেগানা নারী থেকে নিজের মন-মানসিকতা, চোখ, কান জবানকে হেফাজত করে যৌন জীবনকে পবিত্র রাখা। ইসলামী অনুশাসনে প্রত্যেক নারী-পুরুষ সবার জন্য পর্দা করা ফরজ, কেননা পর্দা অশ্লীলতা ও বেহায়াপনার পথ বন্ধ করে সমাজকে কলুষমুক্ত রাখে। পর্দা জিনার পথ বন্ধ করে দেয়। পক্ষান্তরে পর্দা সমাজে প্রতিষ্ঠিত না থাকার ফলেই জিনার পথ খুলে যায়। অথচ আল্লাহতায়ালা বলেন, তোমরা জিনার ধারেকাছেও যেও না। মহান আল্লাহতায়ালা বলেন, হে নবী! মুমিন পুরুষদেরকে বলে দিন, তারা যেন নিজেদের চোখকে বাঁচিয়ে চলে এবং নিজেদের লজ্জাস্থানসমূহের হেফাজত করে। এটা তাদের জন্য উত্তম, যা তারা করে নিশ্চয়ই আল্লাহ সে বিষয় পুরোপুরি অবহিত। (সূরা নূর : ৩০) অন্য আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে, আর হে নবী! মুমিন স্ত্রীলোকদের বলুন, তারা যেন নিজেদের চোখকে নিম্নগামী রাখে, নিজেদের লজ্জাস্থানসমূহের হেফাজত করে ও নিজেদের সাজসজ্জা না দেখায়; কেবল সেসব জিনিস ছাড়া যা আপনা হতে প্রকাশিত হয়ে পড়ে এবং নিজেদের বুকের ওপর ওড়নার অাঁচল ফেলে রাখে। (সূরা নূর : ৩১) সূরা আরাফের ২৬ নম্বর আয়াতে আল্লাহতায়ালা বলেন, হে আদম সন্তান! আমি তোমাদের জন্য পোশাক নাজিল করেছি যেন তোমাদের দেহের লজ্জাস্থানসমূহ ঢাকতে পার। এটা তোমাদের জন্য দেহের আচ্ছাদন ও শোভাবর্ধনের উপায়, সর্বোত্তম পোশাক হলো তাকওয়ার পোশাক। পর্দায় থাকার সুবিধা সম্পর্কে আল্লাহতায়ালা বলেন, হে নবী! তোমার স্ত্রীগণ, কন্যাগণ এবং মুমিন মহিলাদেরকে বলে দাও, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দাংশ নিজেদের ওপর টেনে নেয়, এতে তাদের চিনতে পারা যায় ও ফলে তাদেরকে সহজে উত্ত্যক্ত করা হবে না। আল্লাহ ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু। (সূরা আহযাব: ৫৯)।
মহান আল্লাহতায়ালা নারী-পুরুষ সবাইকে ইসলামী বিধানানুযায়ী চলার তৌফিক দিন। আমিন।
লেখক : গবেষক, প্রাবন্ধিক