গাছপালা, নদ-নদী, পাহাড়-পর্বত প্রকৃতির সব কিছু আল্লাহর সৃষ্টি। আল্লাহ মানুষকে তার সৃষ্টি জগতের সব কিছু সুবিবেচনার সঙ্গে ব্যবহার বা ভোগ করার অধিকার দান করেছেন। প্রতিটি অধিকারের সঙ্গে দায়িত্বশীলতার প্রশ্ন জড়িত। আল্লাহ চান মানুষ দায়িত্বশীলতার সঙ্গে দুনিয়ার সব কিছু ভোগ করুক। প্রকৃতির প্রতি কোনো অন্যায় মহান স্রষ্টার কাছে কাঙ্ক্ষিত নয়। কিন্তু মানুষ প্রায়ই ভুল করে বসে। পরিবেশ দূষণের মাধ্যমে মানুষ শুধু পরিবেশের ক্ষতিই করে না, নিজের সর্বনাশও অনিবার্য করে তোলে। মানুষ গাছপালা নিধন করে প্রকৃতির শীতল পরিবেশকে উষ্ণ করে। নদ-নদীতে বাঁধ দিয়ে কিংবা সুষ্ঠু প্রবাহ রুদ্ধ করে প্রাকৃতিক জলাধারের অপমৃত্যু ডেকে আনে। বায়ু দূষণের মাধ্যমে আবহাওয়ায় সৃষ্টি করে বিরূপ পরিবেশ। যে কারণে দেখা দেয় অনাবৃষ্টি, টর্নেডো কিংবা ভয়াবহ বন্যা। পবিত্র কোরআনের সূরা রুমের ৪১ নম্বর আয়াতে ইরশাদ করা হয়েছে, 'মানুষের কৃতকর্মের দরুন স্থলে ও সমুদ্রে বিপর্যয় ছড়াইয়া পড়ে; যাহার ফলে উহাদিগকে উহাদের কোনো কোনো কর্মের শাস্তি তিনি আস্বাদন করান, যাহাতে উহারা ফিরিয়া আসে।' প্রকৃতির প্রতি মানুষের বৈরী আচরণের জন্য বিশ্বের আবহাওয়া ক্রমেই বৈরী হয়ে উঠছে। এটি মানুষের অন্যায় আচরণের অনিবার্য পরিণতি। বৃষ্টি না হওয়ার কারণে দেশের আবহাওয়া গত অর্ধশতাব্দীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি উষ্ণ হয়ে উঠেছে। দাবদাহে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন। ফসলহানি ও নানা স্বাস্থ্যগত হুমকির মুখে পড়েছে দেশের মানুষ। এ গজব থেকে পরিত্রাণ পেতে আল্লাহর কাছে আমাদের ক্ষমা প্রার্থনা করা উচিত। আল্লাহ যাতে বৃষ্টি ঝরিয়ে এ বিপদ থেকে আমাদের রক্ষা করেন সে জন্য ইসতিসকার নামাজ আদায় করা উচিত। প্রতিটি এলাকার মুমিন পুরুষদের উচিত দলবদ্ধভাবে কেবলামুখী হয়ে বৃষ্টির জন্য নামাজ আদায় করা। হাদিসে আছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বৃষ্টির জন্য আল্লাহর রহমত কামনা করতেন। আমাদের যেমন বৃষ্টির জন্য বিনীতভাবে ইসতিসকার নামাজ আদায় করতে হবে তেমন আমাদের সব পাপের জন্য মাফ চাইতে হবে। মানুষ তার পাপের জন্য অনুতপ্ত হলে আল্লাহ তাকে অবশ্যই ক্ষমা করেন।
লেখক : ইসলামী গবেষক।