অসুস্থদের দেখতে গেলে, তাদের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করলে, তারা অধিকতর স্বস্তিবোধ করেন। সুতরাং শুধু বন্ধুবান্ধব ও আত্দীয়স্বজনই নন বরং যারা দূরসম্পর্কের আত্দীয় ও স্বল্প পরিচিত, সেসব অসুস্থ লোকও দেখতে যাওয়া উচিত। অসুস্থদের দেখতে যাওয়ার জন্য সময় নির্ধারণ করে নিলে ভালো হয়, অসুস্থ ব্যক্তি হাসপাতালে থাকলে রোগী পরিদর্শনের সময়সূচি মেনে চলতে হবে এবং সেখানে খাদ্য ও পানীয় গ্রহণে নিষেধাজ্ঞা থাকলে তাও মেনে চলতে হবে। অসুস্থতার ধরনের ওপর পরিদর্শনের প্রকৃতি ও সময়ের পরিমাণ নির্ভর করে। অসুস্থদের দেখার ব্যাপারে চিকিৎসকের নিষেধাজ্ঞা থাকতে পারে অথবা তাদের সংক্ষিপ্ত সময়ে দেখা যেতে পারে। চিকিৎসকদের অনুমতি থাকলে অসুস্থদের পাশে দীর্ঘ সময় কাটানো আবশ্যক, যাতে তারা অনুধাবন করতে পারেন, তার প্রতি অবহেলা করা হচ্ছে না। পরিদর্শনকারীকে রোগীর পাশেই বসতে হবে এবং তার অবস্থা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতে হবে। রোগী পরিদর্শনকালে তার আরোগ্যের জন্য দোয়া করা উচিত। এই অসুস্থতা পাপ মোচনের জন্যও হতে পারে। রসূলে করিম (সা.) রোগী পরিদর্শনকালে বলতেন : 'লা-বা'স ত্বাগুর ইনশাআল্লাহ' (কোনো ক্ষতির কারণ নেই, যদি আল্লাহর ইচ্ছা হয় সংশোধন করা)।
রোগী পরিদর্শনকারীকে সতর্কতার সঙ্গে সান্ত্বনার বাক্য বেছে বেছে বলতে হবে; ভাগ্যের প্রতি আপত্তির কোনো মন্তব্য, অসুস্থতাকে পাপ হিসেবে উল্লেখ করা অথবা এমন কোনো কথা বলা যা রোগীর ওপর খারাপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করতে পারে ইত্যাদি গ্রহণ করতে উৎসাহিত করা এবং খোদা সবার মঙ্গল করবেন- এরূপ ধারণা রাখতে বলা আবশ্যক। পীড়িত ব্যক্তির অবস্থা নৈরাশ্যকর অবস্থায় উপনীত হলে বলতে হবে, 'ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন' (নিশ্চয় আমরা আল্লাহর জন্য এবং তার দিকেই আমরা ফিরে যাব)।
কোনো মুসলমানের অসুস্থ ব্যক্তিকে তার সাহচর্য থেকে বঞ্চিত রাখা উচিত নয়। অসুস্থ ব্যক্তি তার ব্যাপারে ঘনিষ্ঠতাবোধ করলে তার কাছে যখনই প্রয়োজন হয় যাওয়া দরকার। শুধু রোগী দেখার মধ্যেই সীমিত রাখলে হবে না। সময়ে সময়ে তার স্বাস্থ্য সম্পর্কে পরিবারের কাছে খোঁজখবর নিতে হবে। বন্ধু বা প্রতিবেশী অমুসলিম হলেও অসুস্থ হলে তাকে দেখতে যেতে হবে।
লেখক : খতিব, বাইতুল মুমিন জামে মসজিদ, ধানমন্ডি, ঢাকা।