মহান আল্লাহর অনুগ্রহে তাওহিদ ও রিসালাতের চিরসত্য সুন্দর আহ্বান নিয়ে তুরাগতীরে প্রতি বছরের মতো এ বছরও অনুষ্ঠিত হচ্ছে বিশ্ব ইজতেমা। আজ অনুষ্ঠিত হবে আখেরি মোনাজাত। এ মোনাজাতে অন্তত ২৫ লাখ মুসলি্ল অংশ নেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। পবিত্র কোরআনে দাওয়াতের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। মহান আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেছেন- 'তোমরা অনুসরণ কর তাদের, যারা তোমাদের কাছে কোনো বিনিময় কামনা করে না তারা সুপথ প্রাপ্ত'। (সূরা ইয়াসিন-২১) অপর আয়াতে বলেন, 'হে নবী! আপনি বলে দিন, আমার রাস্তা এটাই যে আমি পরিপূর্ণ বিশ্বাসের সঙ্গে আল্লাহতায়ালার দিকে মানুষকে ডাকি এবং যারা আমার অনুসারী তারাও আল্লাহতায়ালার দিকে মানুষকে ডাকে'। (সূরা ইউসুফ-১০৮) অন্যত্র ইরশাদ করেন- 'নিঃসন্দেহে আল্লাহতায়ালা মুসলমানদের কাছ থেকে তাদের জানমালের বিনিময়ে জান্নাত ক্রয় করে নিয়েছেন'। (সূরা তাওবা-১১১)
পবিত্র কোরআনের বিভিন্ন আয়াতে দীনি দাওয়াতের গুরুত্বের কথা বুঝানো হয়েছে এবং এ কাজ ছিল নবী রসুলগণের কাজ। অসামান্য মেহনতের মাধ্যমে তারা মানুষকে আল্লাহর দীনের পথে আহ্বান করতেন এবং কোনো বিনিময় নিতেন না। মানুষকে অাঁধার থেকে তুলে আনতেন আলোর জ্যোতিতে। দীনে হেদায়েতের শিক্ষা তথা জাহান্নাম থেকে বাঁচার উপায় বলে দিতেন। আর দাওয়াত ও তাবলিগ হলো নবী আদর্শের ছায়া হিসেবে বিবেচিত নিঃস্বার্থ আন্দোলন।
যুগে যুগে আল্লাহ দিশাহারা মানবজাতিকে পথভ্রষ্টতা থেকে রক্ষা করে হেদায়াতের মানসে অসংখ্য নবী-রসুল প্রেরণ করেছেন। সেই আদম আলাইহিস সালাম থেকে নিয়ে সর্বশেষ প্রিয়নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পর্যন্ত প্রেরিত প্রত্যেক নবী-রসুলই দাওয়াত ও তাবলিগের কাজ আঞ্জাম দিয়ে গেছেন। যেহেতু রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওসাল্লাম প্রেরিত সর্বশেষ নবী এবং আমরা তার সর্বশেষ উম্মত, সে জন্য আল্লাহ ও তার পেয়ারা রসুল এ উম্মতের প্রতি দাওয়াত ও তাবলিগের মেহনতকে অত্যাবশ্যকীয় করে দিয়েছেন। বিদায় হজের অমীয় ভাষণে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, 'শোন! আমার পর আর কোনো নবী আসবে না। তাই তোমরা উপস্থিতগণ আমার পক্ষ থেকে অনুপস্থিতিদের কাছে দীনের একটি কথা হলেও পৌঁছে দাও। [বুখারি ও ইবনে মাজহা]
তাবলিগ জামাত রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এ নির্দেশকেই বাস্তবায়ন করছে। বিশ্ব ইজতেমার দাওয়াতি সম্মিলন তারই প্রমাণ।
লেখক : ইসলামী গবেষক।