আল্লাহ ও রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সব সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়ার মধ্যেই মানুষের সার্বিক কল্যাণ নিহিত। আল্লাহতায়ালাকে একক সত্তা, সব বিষয়ে তাঁকে ক্ষমতা ও কর্তৃত্বের অধিকারী মেনে নেওয়াই আল্লাহর একত্ববাদে বিশ্বাসের মূল কথা। এটিই আহলে সুন্নত ওয়াল জামাতের বিশ্বাস। আর রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সব আদেশ-নিষেধ মেনে চলার মধ্যে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ প্রদর্শন, তাঁর রিসালাতকে স্বীকৃতি দেওয়ার হাকিকত নিহিত। আল্লাহ ও রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কোনো সিদ্ধান্ত অস্বীকার করার অধিকার কোনো মুমিন নারী-পুরুষের নেই। যদি করা হয় তাহলে তা হবে আল্লাহ ও রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে উদ্যত আচরণের শামিল। এ প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা বলেন, 'আল্লাহ ও তাঁর রসুল কোনো বিষয়ে নির্দেশ দিলে কোনো মুমিন পুরুষ কিংবা মুমিন নারীর সে বিষয়ে ভিন্ন সিদ্ধান্তের অধিকার থাকবে না। কেউ আল্লাহ এবং তাঁর রসুলকে অমান্য করলে সে তো স্পষ্টতই পথভ্রষ্ট' (৩৩:৩৬)।
আল্লাহকে একক উপাস্য হিসেবে বিশ্বাস করে এবং মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে তাঁর রসুল হিসেবে মেনে নিয়ে আবার আইন-কানুন, বিধি-বিধানের ক্ষেত্রে যদি নিজেদের মনমতো বা খেয়ালখুশি মতো কিছু করা হয় তাহলে তা হবে কিছু মানা আর কিছু না মানার অন্তর্ভুক্ত। যা ছিল ইহুদি-নাসারাদের চরিত্র। এটাও আল্লাহর সঙ্গে এক ধরনের নাফরমানি। কেননা কোনো বিষয়ে বাহ্যিকভাবে একটু কষ্টকর বা কঠিন মনে হলেও মূলত আল্লাহ ও রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়ার মধ্যেই সত্যিকারের কল্যাণ নিহিত। কারণ, আমরা যেটাকে কল্যাণ মনে করি চূড়ান্তভাবে তাতে কল্যাণ নাও থাকতে পারে। চূড়ান্ত পর্যায়ে অকল্যাণ আরও বেড়ে যেতে পারে। আর আমরা বাহ্যিকভাবে যাকে অকল্যাণ মনে করছি চূড়ান্ত পর্যায়ে কল্যাণও নিহিত থাকতে পারে। কেননা, চূড়ান্ত পরিণতি মানুষের হাতে নয়; বরং আল্লাহতায়ালারই হাতে।
এ প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা বলেন : 'এমন হতে পারে যে, আল্লাহ যাতে প্রভূত কল্যাণ রেখেছেন তোমরা তাকেই অপছন্দ করছ' (৪:১৯)। অতএব আমাদের জীবনের সর্বক্ষেত্রে আল্লাহতায়ালা ও তাঁর রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বিধি-বিধান মেনে চলতে হবে। এর ব্যতিক্রম করলে তাতে শুধু আমাদের অকল্যাণই বয়ে আনবে। কল্যাণের কোনো কিছু পাওয়া যাবে না। আল্লাহতায়ালা আমাদের সবাইকে তৌফিক দিন। আমিন।