আল্লাহতায়ালা মানুষকে আশরাফুল মাখলুকাত বানিয়েছেন। এটা তাঁর দয়া। ইচ্ছা করলে তিনি মানুষকে নিকৃষ্টতম প্রাণী বানাতে পারতেন। এ দুনিয়ায় সিংহ, বাঘ ও অন্যান্য বন্যপশু আছে, সেগুলো শক্তির প্রশ্নে মানুষের চেয়ে অনেক শক্তিশালী। যেহেতু আল্লাহপাক সেগুলোকে পশু হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন, তাই সেগুলো নেতৃত্বের অবস্থানে আসতে পারেনি। মানুষ পৃথিবীর অনেক প্রাণীর চেয়ে দুর্বল হওয়া সত্ত্বেও শ্রেষ্ঠত্ব লাভ করেছে। এটি পরম করুণাময় আল্লাহর অসীম দয়ার ফল। তা না হলে মানুষ জানোয়ারের চেয়েও অধম অবস্থানে থাকত। আল্লাহর নেয়ামত পেয়ে মানুষ যদি নিজেদের আল্লাহর বান্দা মনে করে আল্লাহর আনুগত্য স্বীকার করে, তবে আশা করা যায় তাদের এ নেতৃত্ব ও প্রাধান্য বহাল থাকবে। আর যদি পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান নেয়ামত- দীন আমানত পাওয়ার পর এর খেয়ানত করে, তবে তারা পশুর চেয়েও অধম জাতিতে পরিণত হয়ে যাবে। আল্লাহপাক মানুষকে হেফাজত করুন!
আল্লাহতায়ালা বলেন, মানুষের দুটি স্বভাব রয়েছে : ১. অকৃতজ্ঞতা ২. অধৈর্য হওয়া। যারা এ স্বভাব পরিবর্তন করে কৃতজ্ঞ ও ধৈর্যশীল হতে পারে, মূলত তারাই প্রকৃত মানুষ এবং আমি তাদেরই সফলকাম করি। আসলে এসব মানুষই দুনিয়ার মূল লক্ষ্যবস্তু। আল্লাহতায়ালা তাদের পরিচয় দিয়ে বলেছেন- 'যারা ধৈর্য ধারণ এবং নেক আমল করে, তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও বড় প্রতিদান।' মানুষ যখন সম্পদ পায়, তখন মাতাল ও অহংকারী হয়ে যায়। আর যদি কিছু দিনের জন্য ওই নেয়ামত ছিনিয়ে নেওয়া হয়, তখন কুফরি ও অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। আমার দয়ার কথা স্মরণ করে না। মানুষের এহেন স্বভাব দূর করার পদ্ধতি বোঝানোর জন্য অনেক ব্যাখ্যার প্রয়োজন। আল্লাহ বলেন, 'তবে যারা ধৈর্যশীল...'। সমাজের চাহিদা যতক্ষণ আল্লাহর চাহিদার সঙ্গে মিল না হয়, ততক্ষণ তারা তা পরিহার করে। সমাজের চাহিদা পরিহার করে আল্লাহর চাহিদা অনুযায়ী চলা সহজ নয়। এ জন্য আল্লাহপাক ধৈর্যের কথা উল্লেখ করেছেন। তবে যে বিষয় যত কঠিন হয়, পরবর্তীতে তা তত সহজ হয়।
লেখক : খতিব, গুলশান সেন্ট্রাল জামে মসজিদ।