অর্থনৈতিক উন্নতিতে কৃচ্ছ্রতার একটি বিশেষ উল্লেখযোগ্য প্রভাব রয়েছে। আর কৃচ্ছ্র ও অপচয় রোধ ইসলামের একটি সুমহান শিক্ষাও বটে। ইসলামের এই মহান শিক্ষাকে বাস্তবায়ন করলে অর্থনৈতিক উন্নয়নে সুফল পাওয়া যাবে। পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে- তোমরা পানাহার কর কিন্তু অপচয় কর না। (আরাফ : ৩১)।
অর্থাৎ পানাহার করতে মানা নেই। তবে অপচয় করা যাবে না। অথচ এই পানাহারের ক্ষেত্রে দেশে অপচয় কি কম হয়? বিশুদ্ধ পানির বেশ অভাব রয়েছে এখন দেশে। কিন্তু যারা সহজেই বিশুদ্ধ পানি পাচ্ছেন তারা অনেকেই অপচয় করেন। তদ্রূপ খাদ্য অপচয়ও দেখা যায় বিভিন্ন মহলে। যে উন্নত খাবার দরিদ্র ও জনগোষ্ঠী বছরে দু-একবারও খেতে পায় না তা অনেকে অপচয়ও করেন। কমিউনিটি সেন্টারগুলোতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যে ভূরিভোজের আয়োজন হয় তার অনেকটাই অপচয় হয়। নষ্ট হয়। ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়া হয়। মাঝে মধ্যেই বঞ্চিত, দরিদ্র মানুষকে ডাস্টবিন থেকে কুড়িয়ে সেসব খাবার খেতেও দেখা যায়। এ তো গেল শুধু পানাহারের বিষয়। এ ধরনের আরও বহু ক্ষেত্রেই প্রতিনিয়ত অপচয় হতে দেখা যায়। বিদ্যুৎ-গ্যাসের অপচয়ের কথাই যদি আমরা চিন্তা করি তাহলে দেখা যাবে, যারা বিদ্যুৎ-গ্যাস পাচ্ছেন তারা তা অপচয় করেন, আবার অনেকে বিদ্যুৎ ও গ্যাস সুবিধা থেকে বঞ্চিত। অথচ পরিকল্পিতভাবে বিদ্যুৎ ও গ্যাস ব্যবহারে সাশ্রয়ী হলে আরও বেশি জনগণ এ সুবিধা পেতে পারে।
অপচয়কারীদের পবিত্র কোরআনে শয়তানের ভাই বলা হয়েছে। এরশাদ হচ্ছে- অপব্যয়কারীরা শয়তানের ভাই। (ইসরা-২৭)। কৃচ্ছ্র সাধন ও অপচয় রোধের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে আমরা সবাই উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারি। ইসলাম আমাদের এই মহান শিক্ষাই দেয়। নিজের ও দেশের স্বার্থে আমাদের সবারই এ ব্যাপারে সচেতন হওয়া জরুরি।
লেখক : খতিব, মোহাম্মদিয়া দারুল উলুম জামে মসজিদ, পশ্চিম রামপুরা ঢাকা।