যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্কারোপের কারণে অনেক ক্রেতা প্রতিষ্ঠান ক্রয়াদেশ স্থগিত করতে শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন পোশাক খাতের উদ্যোক্তারা। তারা বলছেন, কোনো কোনো ক্রেতা প্রতিষ্ঠান মূল্যছাড়ও চাইতে শুরু করেছে। তাদের ধারণা, মার্কিন বাজারে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ রপ্তানি কমে যেতে পারে ৩৭ শতাংশ পাল্টা শুল্কারোপের ঘটনায়। গতকাল রাজধানীর মহাখালী ডিওএইচএস এলাকায় বিজিএমইএ নির্বাচনি জোট ফোরামের কার্যালয় ও ওয়েবসাইট উদ্বোধন অনুষ্ঠানে গার্মেন্ট মালিকরা এসব কথা বলেন। এ সময় ফোরাম প্যানেল লিডার মাহমুদ হাসান খান বাবু বলেন, যুক্তরাষ্ট্র কি চায় তা জেনে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। গত মার্চে তৈরি পোশাক খাতে উচ্চ প্রবৃদ্ধি হয়েছে, তবে সামনে সংকট। অবিলম্বে কূটনৈতিক উদ্যোগ নিয়ে নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করতে হবে। সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে এখানে পদক্ষেপ নেওয়া ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্ত বদল করা যাবে কিনা তাতে সন্দিহান আমরা। এ সময় বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি ড. রুবানা হক বলেন, রপ্তানিকারকদের কাছ থেকে আমরা জানতে পারছি, অনেক ক্রেতা প্রতিষ্ঠান চলমান ক্রয়াদেশ স্থগিতের নির্দেশনা দিতে শুরু করেছে। যখন পোশাকের ন্যায্য দাম না পাওয়ার চ্যালেঞ্জ চলমান, তখন লোকসান কমাতে নতুন করে মূল্যছাড়ের দাবি করছে তারা। প্রকৃত পরিস্থিতি কি তাতে নজর রাখাটা জরুরি। বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি আনিসুর রহমান সিনহা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র কী চায় তা জানতে হবে সরকারকে। অনাকাঙ্ক্ষিত এই সুনামিতে পোশাক রপ্তানি ২০ থেকে ৩০ শতাংশ কমে যেতে পারে। পাকিস্তান ও ভারতের শুল্ক হার তুলনামূলক কম বেড়েছে উল্লেখ করে বিজিএমইএ’র আরেক সাবেক সভাপতি আনোয়ার-উল-আলম চৌধুরী পারভেজ বলেন, যেসব কারখানার পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে বড় অংশ রপ্তানি হয়, তারা প্রতিযোগিতা সক্ষমতা হারাবে।
ফোরাম মহাসচিব ড. রশিদ আহমেদ হোসাইনী বলেন, গত শত বছরের মধ্যে এমন ঘটনা ঘটেনি। দেশটি থেকে প্রয়োজনে আমদানি বাড়িয়ে শুল্ক কমানো যায় কিনা সেই উদ্যোগ নিতে হবে। অর্থনীতি টিকিয়ে রাখতে রপ্তানি খাত যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে ব্যবস্থা নিতে হবে। উল্লেখ্য, গত ২ এপ্রিল, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নতুন শুল্কনীতি ঘোষণা করেন। তিনি বাংলাদেশি পণ্যে ৩৭ শতাংশ পাল্টা শুল্কারোপ করেন। এই ঘটনায় দুনিয়াজুড়ে কয়েক দিন ধরে তোলপাড় চলছে।