প্রবাসীদের ভোট দেওয়ার সুযোগ দিতে চূড়ান্ত পদ্ধতি নির্ধারণে প্রযুক্তিবিদদের নিয়ে একটি ‘অ্যাডভাইজরি কমিটি’ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রবাসীদের ভোটদানের সুযোগ দিতেই এ উদ্যোগ নিয়েছে কমিশন। নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ গতকাল নির্বাচন ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
প্রবাসীদের ভোট নেওয়ার কাজটি সম্ভাব্য তিন পদ্ধতিতে করা যায়। পোস্টাল ব্যালট, অনলাইন ভোটিং ও প্রক্সি ভোটিং। এ তিন পদ্ধতির বিষয়ে আগের দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট, এমআইএসটি-এর বিশেষজ্ঞসহ মন্ত্রণালয়, বিভাগ, সরকারি-বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিদের নিয়ে কর্মশালা করে ইসি। এরপর গতকাল এ বিষয়ে ইসির অবস্থান তুলে ধরলেন নির্বাচন কমিশনার সানাউল্লাহ। তিনি বলেন, আমাদের পরবর্তী কার্যক্রম হচ্ছে, একটা অ্যাডভাইজরি টিম গঠন করব। গতকাল যারা বিশেষজ্ঞ ছিলেন তাদের নিয়ে। তিনটি পদ্ধতির সফলতা, দুর্বলতা পর্যালোচনা করে কী করে দুর্বলতা কাটানো যায়, সে ব্যবস্থা তারা করবেন। এরপর আমরা অংশীজনদের সঙ্গে বসব। আমরা যাই করি না কেন, যে সময়টা আমরা পাব, তার মধ্যেই কাস্টমাইজ করতে হবে। তাই সময় না পেলে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না। প্রবাসীদের ভোটের আওতায় আনার বিষয়ে ইসি ‘বদ্ধপরিকর’ জানিয়ে সানাউল্লাহ বলেন, ইসি একটা দিনও সময় নষ্ট করছে না। তবে কোন পদ্ধতিতে হবে, সেটা কারিগরি টিম কাজ করার পর চূড়ান্ত হবে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা বলেছি যদি সর্বোচ্চ ভোটারকে আনতে চাই, তাহলে প্রক্সি একমাত্র অপশন। এখনো কমিশনের অবস্থান একই আছে। কর্মশালায় প্রক্সি ভোটের দুর্বলতা অনেকে তুলে ধরেছেন। সফলতাও তুলে ধরেছেন। অন্যগুলোর ক্ষেত্রেও তাই। কোনো অপশনকেই আমরা সিঙ্গেল আউট করছি না। বাংলাদেশের জন্য কোনো একটি সিঙ্গেল অপশন অ্যাপলিকেবল না। কম্বাইন্ড অপশনের দিকে যেতে হবে। তিনটা পদ্ধতিকে যদি আনা যায়, তাহলে আমরা তিনটা পদ্ধতিকেই আনব। এ নির্বাচন কমিশনার বলেন, প্রধান উপদেষ্টা প্রথম তাঁর ভাষণে প্রবাসীদের ভোটের অধিকার দেওয়ার কথা বলেছেন। নির্বাচন কমিশনও সেই প্রত্যাশা ধারণ করে। বিশ্বের ১৭৮টি দেশের মধ্যে ১১৫টি দেশ তাদের প্রবাসী নাগরিকদের ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা রেখেছে। সবচেয়ে অনুসৃত পদ্ধতি হচ্ছে দূতাবাসে, এরপর হচ্ছে পোস্টাল ব্যালট, এরপর হচ্ছে অনলাইন বা প্রক্সি ভোটিং। বাংলাদেশের প্রবাসীদের যে বিস্তৃতি, তাতে দূতাবাসে করার সুযোগ সীমিত। এজন্য তিনটিকে শর্ট লিস্ট করেছি। পোস্টাল ব্যালট, অনলাইন ও প্রক্সি ভোটিং। তিনটিরই কিছু সীমাবদ্ধতা আছে, কিছু সুবিধাও আছে। কমিশনের কাছে বিষয়টি উত্থাপনের পর নির্বাচন, আইন, কারিগরি ও নির্বাচনি ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞদের নিয়ে কর্মশালা করি। যেখানে ১০টি টিম তাদের উপস্থাপনা উপস্থাপন করেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট, এমআইএসটি, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন ওই কর্মশালায়।