জীবনে আমরা সবাই কমবেশি অবসাদে ভুগেছি এবং ভুগছি। কখনও কাজের চাপের অবসাদ, কখনও চাকরি না পাওয়ার অবসাদ, কখনও বৈবাহিক জীবনে অশান্তির কারনে অবসাদ, কখনও অন্যদের থেকে পিছিয়ে পড়ার ভয় থেকে অবসাদ। জীবনে যে কোন পর্যায়ে আমাদের ঘিরে ধরতে পারে এই অবসাদ। কখনও কখনও এটি চরম আকার ধারণ করে। আর দীর্ঘদিন অবসাদে ভুগে মানুষ বেছে নেয় আত্মহত্যার পথ। অবসাদ কাটাতে অবশ্য চিকিৎসকদের সাহায্য পাওয়া গেলেও নিজেকে নিজে সাহায্য না করলে কখনোই অবসাদ কাটানো সম্ভব নয়। তবে কিছু জিনিস মেনে চললে কাটতে পারে এই অবসাদ। তেমনই কিছু উপায় হলো:
-মনযোগী হোন: অবসাদে ভুগলে মনে সবসময় ভুলভাল ও অপ্রয়োজনীয় ভাবনা ভিড় করে। এই ধরনের নেগেটিভ চিন্তা অবসাদগ্রস্ত মানুষকে কোনভাবে সাহায্য তো করতেই পারে না, বরং আরও গভীর অবসাদের দিকে ঠেলে দেয়। নিজের ইন্দ্রিয়কে সজাগ রেখে দৃশ্য, স্পর্শ, শব্দ, স্বাদের ব্যাপারে মনযোগী থাকুন। নিজেকে মনযোগী করে কাজের মধ্য ব্যপ্ত থাকলে নেগেটিভ চিন্তা মাথায় আসবে না।
-গান শুনুন: অবসাদ কাটানোর জন্য খুবই উপযোগী গান শোনা। তবে দুঃখের গান নয়, এমন গান শুনুন যা মনকে শান্তি দেবে। খুশি রাখবে আপনাকে। পজিটিভ গান শুনলে চারপাশটাই পজিটিভ হয়ে ওঠে। মানসিক অবস্থার পরিবর্তন করে অবসাদ দূরে রাখতে পারে গান।
-নেগেটিভ কথা বলা বন্ধ করুন: অবসাদে ডুবে থাকা মানুষ নিজের চারপাশে সবসময়ই হতাশা দেখে। কথাবার্তার মধ্যেও ফুটে ওঠে নেগেটিভ চিন্তাভাবনা। নিজের সম্পর্কে সংশয়, নিজেকে মূল্যহীন ভাবেন। এইসময় মানুষ খারাপ কিছু ঘটলে নিজেকে দোষ দেয়, ভাল কিছু ঘটলে ভাগ্যকে ধন্যবাদ জানায়। তাই নেগেটিভ চিন্তা, নেগেটিভ কথাবার্তা থেকে দূরে থাকা উচিত্।
-ক্ষোভ: অপ্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে ভাবা ও প্রয়োজনের থেকে বেশি চিন্তা করা থেকে নিজেকে দূরে রাখুন। এসব ক্ষোভ, ভাবনা চিন্তাই আপনার সবচেয়ে বড় শত্রু। এরাই আপনাকে অবসাদের গভীরে নিয়ে যায়। বই পড়ে বা পাজল সলভ করে সময় কাটালে অবসাদ থেকে দূরে থাকা যাবে।
-ভাল করে ঘুমান: অবসাদে ভুগলে মানুষের ঘুম কমে যায়। সবসময় অস্বস্তি ও মানসিক চাপের কারণে টানা ভাল ঘুম হয় না। কিন্তু শারীরিক বা মানসিক সুস্থতার জন্য ভাল ঘুম খুবই জরুরী।
-শরীরচর্চা: অবসাদ কাটাতে প্রতিদিন শরীরচর্চা করা প্রয়োজন। শরীরচর্চার ফলে শরীর থেকে এনডোরফিন বেরিয়ে যায়। ফলে আমাদের মন ভাল থাকে। মন ভাল রাখার পাশাপাশি শরীর সুস্থ থাকায় রোগভোগও অনেক কম হয়। বাড়ে আত্মবিশ্বাস। সকল মানুষেরই প্রতিদিন আধ ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টা শরীরচর্চা করা উচিত্।
-মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন: অবসাদে ভুগলে মানুষ অনেক সময় নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখে। কিন্তু এই সময় সবচেয়ে খারাপ একা থাকা। বাড়ির বাইরে বেরোতে মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে এই সময় অনীহা দেখা যায়। একা সময় কাটাবেন না। বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন, সময় কাটান। জীবন উপভোগ করুন।
বিডি-প্রতিদিন/ ০৪, ফেব্রুয়ারি, ২০১৫/ রোকেয়া।