মদকে বিদায় জানিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে অনেকে নানান ধরনের চেষ্টা চালিয়ে থাকেন। এই চেষ্টা হবে এবার ‘ভালোবাসা’ দিয়ে। লাভ হরমোন কাটাবে মদের নেশা। সম্প্রতি পিএনএএস জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণার ফলে জানা গেছে, মস্তিষ্কে অ্যালকোহলের মাদকীয় প্রভাবকে বাধা দেয় ভালোবাসা হরমোন নামে খ্যাত অক্সিটসিন।
সিডনি বিশ্ববিদ্যালয় এবং রিজেনসবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা জানিয়েছেন, অক্সিটসিন অ্যালকোহলের মাদকীয় প্রভাবকে অসাধারণভাবে প্রভাবিত করে। সিডনির বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞানী এবং ওই গবেষণায় নেতৃত্বদানকারী ডা. মাইকেল বোয়েন বলেন, 'গবেষণার সময় কিছু ইঁদুরকে অ্যালকোহল দিয়ে নেশাগ্রস্ত করা হয়েছিল। তারপর তাদের মস্তিষ্কে অক্সিটসিন প্রবেশ করানো হলে ইঁদুরগুলোর মধ্যে ওই নেশা কমে যায়।'
একই পরিমাণ অ্যালকোহল আরো কিছু ইঁদুরকে দেওয়া হয়। কিন্তু তাদেরকে অক্সিটসিন দেওয়া হয় না। এতে দেখা যায়, ওই ইঁদুরগুলো অতিরিক্ত নেশাগ্রস্ত হয়ে মারা যাচ্ছে। ইঁদুরের এই গবেষণা থেকে অক্সিটসিন মদের নেশা কাটাতে লক্ষণীয় প্রভাব রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে। বোয়েন জানান, প্রাথমিকভাবে ইঁদুরের ওপর গবেষণায় সফলতা মিলেছে। আশা করা হচ্ছে মানুষের ক্ষেত্রেও এটি সমানভাবে কাজে দেবে।
উল্লেখ্য, অক্সিটসিন শরীরে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই তৈরি হয়। যৌনতা, যৌনাবেদন, আস্থা, বিশ্বাস-এই সবকিছুর সঙ্গেই রয়েছে এর নিবিড় যোগাযোগ। মেয়েদের বেলায় এ হরমোন নিসৃত হয় সন্তান প্রসবের সময়। বুকের দুধ তৈরি হওয়া এবং জরায়ু মুখ ফের ছোট হয়ে আসার কাজ করে এই অক্সিটসিন। সন্তানকে দুধ খাওয়ানোর সময় এই হরমোনে সিক্ত হয় মস্তিষ্ক; ফলে মা ও শিশুর মধ্যে গড়ে উঠে অনুপম এক বন্ধন।
মোট কথা, যৌন আচরণ এবং দীর্ঘমেয়াদী বন্ধন রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে অক্সিটসিন।
বিডি-প্রতিদিন/২ মার্চ ২০১৫/শরীফ