মা হওয়ার স্বপ্ন প্রতিটি নারীরই চিরন্তন। তবে আজকাল সন্তান না হওয়া বা বন্ধ্যা হওয়ার হার আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে গেছে। আগে যেখানে অনেকটা বয়স হয়ে গেলেও সন্তানের মা হওয়ার ব্যাপারটা ছিল, আজকাল দেখা যাচ্ছে সম্পূর্ণ উল্টো। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বয়স ৩০ পেরিয়ে গেলেই নারীদের সন্তান ধারণে জটিলতা দেখা দিচ্ছে। সন্তানহীন দম্পতিদের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। তাই একজন নারীর উর্বরতা নিশ্চিত করতে ও সন্তান ধারণে সক্ষমতা আনতে যেসব বিষয় জানা অতি জরুরী সেগুলো হলো :
১) স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা
নিজের স্বাস্থ্য সম্পর্কে কম বয়সেই সচেতন হতে হবে। নিজেকে জানুন, নিজের শরীর সম্পর্কে জানুন। এতে লজ্জা পাওয়ার কিছু নেই। বিবাহিত-অবিবাহিত প্রত্যেক নারীরই উচিত দুই বছর পরপর স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ দ্বারা নিজের একটি সম্পূর্ণ চেক-আপ করানো। এতে অনেক ধরণের অনাকাঙ্ক্ষিত অসুখ সম্পর্কেও আগেভাগে জানা যাবে।
২) পিরিয়ড সমস্যায় অবহেলা নয়
পিরিয়ড সংক্রান্ত যে কোন সমস্যাকে মোটেও অবহেলা করবেন না। পিরিয়ড না হওয়া, অনিয়মিত পিরিয়ড, পিরিয়ড দেরি হওয়া, এসময় প্রচণ্ড ব্যথা বা অন্য যে কোন পিরিয়ডজনিত সমস্যা দেখা দিলে অবিলম্বে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। বিষয়টি নিয়ে মোটেও লজ্জা পাবেন না।
৩) ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন
নিজের ওজনটা সবসময় নিয়ন্ত্রণে রাখুন। সুস্থ সন্তান ধারণের জন্য ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা খুব জরুরী। বিশেষ করে যাদের তলপেট ভারী, তাঁরা অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করুন ও ওজন কমানোর চেষ্টা করুন। জরায়ুর আশেপাশে চর্বি জমে গেলে সন্তান ধারণে অসুবিধা হওয়া খুবই স্বাভাবিক ঘটনা।
৪) স্বেচ্ছায় গর্ভপাত পরিহার
স্বেচ্ছায় গর্ভপাত জিনিসটাকে শতভাগ পরিহার করুন। বিশেষ করে যদি আপনি প্রথমবার গর্ভবতী হয়ে থাকেন, তাহলে অবশ্যই গর্ভপাত করাবেন না। পরবর্তীতে এর বড় মাসুল দিতে হতে পারে। আজকাল অনেক মেয়েই বিয়ের আগে অনিয়ন্ত্রিত জীবন যাপন করেন। ফলে দেখা যায় এক বা একাধিক অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভপাত করাতে হয়। যাতে নিজেরই সর্বনাশ ডেকে আনছেন তাঁরা
৫) ইমারজেন্সি কন্ট্রাসেপটিভ পিল পরিহার
আই পিল বা এই ধরণের যত ইমারজেন্সি কন্ট্রাসেপটিভ পিল আছে, সেগুলো অবশ্যই পরিহার করুন। যদিও কোম্পানিগুলো দাবি করে যে এগুলো শতভাগ নিরাপদ। কিন্তু সত্য হচ্ছে দীর্ঘ মেয়াদে এগুলো ব্যবহার করলে পরিণাম সন্তান ধারণে অক্ষমতা। প্রথম সন্তান নেওয়ার আগে জন্মবিরতিকরন পিল ব্যবহার করবেন না।
৭) নিয়মিত ব্যায়াম
নিয়মিত ব্যায়াম করুন। ওজন বাড়ানো কিংবা কমানোর জন্য নয়, নিজেকে সুস্থ রাখতে কায়িক পরিশ্রম করুন। সুস্থ মা মানেই সুস্থ শিশু।
৮) ধূমপান থেকে দূরে থাকুন
ধূমপান বা মদ্যপান, কিংবা যে কোন নেশার অভ্যাস থেকে শত হাত দূরে থাকুন।
৯) স্বাস্থ্য সম্মত খাবার
খাদ্য তালিকায় রাখুন স্বাস্থ্য সম্মত খাবার। ডিম, দুধ, হরেক রকম সবজি, সামুদ্রিক মাছ ইত্যাদি খাবার নারীর উর্বরতা বৃদ্ধিতে সহায়ক।
বিডি-প্রতিদিন/ ০১ জুলাই, ২০১৫/ রোকেয়া।