বিশ্বাসযোগ্য না হলেও ঘটনা সত্যি। মাথায় পাওয়া আঘাত থেকে রীতিমতো পণ্ডিত গণিতজ্ঞদের একজন হয়ে উঠেছেন জেসন প্যাডগেট (৪৩)। বিশ্বে তার মতো মস্তিষ্কের সমস্যায় ভুগছেন মাত্র ৪০ জন। মাথায় আঘাতজনিত কারণে সৃষ্ট এ সমস্যাটির নাম অ্যাকোয়ার্ড স্যাভান্ট সিনড্রোম। মস্তিষ্কে আঘাত বা জটিল কোনো অসুখের কারণে সৃষ্ট এ সমস্যায় স্বাভাবিক কোনো মানুষ গণিত, ছবি আঁকা বা মিউজিকে অসামান্য প্রতিভাধর হয়ে ওঠেন।
২০০২ সালের ১৩ই সেপ্টেম্বর শুক্রবার রাতের ঘটনা। অজ্ঞাত দুই ব্যক্তি জেসনের মাথায় পেছন থেকে আঘাত করে ও মাথায় ঘুষি মেরে তাকে অচেতন করে ফেলে। ১২ বছর আগের ৩১ বছর বয়সী সেই উচ্ছ্বল ও যে কোনো ফূর্তির পার্টিতে প্রাণ সঞ্চারকারী, পেশীবহুল সুঠাম ও সুদর্শন জেসন এখন একজন অন্য মানুষ। ওই ঘটনার পর থেকেই বাড়ির বিভিন্ন আকৃতির বস্তুগুলো জেসনের মনোযোগ আকৃষ্ট করতে শুরু করে। আয়তক্ষেত্র বা বর্গক্ষেত্রকার, ত্রিভুজাকার বা বৃত্তাকার যে কোনো বস্তু তাকে ভাবে আবিষ্ট করে ফেলল। দরজা, জানালা, মেঝে, চামচ কিছুই বাদ গেলো না সে তালিকা থেকে। যোগ হলো বাইরের সুবিশাল প্রকৃতিও। কোনো সংখ্যা দেখলেই তার মানসপটে ভেসে উঠত রঙিন নানা বস্তুর আকৃতি। কর্মস্থলে যাওয়া বন্ধ করে দিলেন জেসন। গণিত বা পদার্থবিদ্যাবিষয়ক যা কিছুই সামনে পেলেন, সেটাই পড়তে শুরু করে দিলেন তিনি। ভগ্নাংশ ও পাই সংক্রান্ত অঙ্কগুলো তাকে মোহাবিষ্ট করে রাখত। তার জীবনে মোড় পরিবর্তনকারী ছিল ওই ঘটনা।
এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএনআই ও অনলাইন ডেইলি মেইল। আর সেই ঘটনার পর থেকেই পেশাগত, পারিবারিক সব জীবনেই তিনি হয়ে উঠলেন নতুন এক মানুষ। সম্পূর্ণ বদলে যাওয়া নতুন মানুষ। জেসন বিশ্বাস করেন, বিশ্বের প্রতিটি মানুষই কিছু সুপ্ত প্রতিভা নিয়ে পৃথিবীতে আসেন এবং তাদের জন্য তিনি দৃষ্টান্ত হতে পারেন। নিঃসন্দেহে জেসনের এ ঘটনা অনুপ্রেরণা যোগাবে নতুন কিছু করার, অসম্ভবকে সম্ভব করার।