থ্রি-ইডিয়ট ছবির মধ্যে 'অল ইজ ওয়েল' বাক্যটি শুনে 'মৃত' বাচ্চাটি আমির খানের বুকে লাথি মেরেছিল। কিন্তু এবার কোন বাক্য শুনে বা সিনেমার গল্প নয়, ঢাকার আজিমপুর কবরস্থানেই ঘটল এমন ঘটনা।
মৃত ঘোষণার প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা পর জানাজা পড়াতে গিয়ে নড়ে উঠল নবজাতক শিশু। আজিমপুর কবরস্থানে শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব কলেজের শিক্ষার্থীরা জানান, তারা এক বন্ধুর বাবার কবর জিয়ারত করতে আজিমপুর কবরস্থানে গিয়েছিলেন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে একটি বাচ্চাকে নিয়ে কবরস্থানে আসেন কয়েকজন লোক। সেখানে ওই বাচ্চাকে জানাজা পড়ানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তারাও সেখানে জানাজায় অংশগ্রহণের জন্য কাতারে দাঁড়ান। এর কিছুক্ষণ পরেই বাচ্চার খালু জোবায়ের হোসেন বাচ্চার বাবাকে ডেকে বলেন, 'বাচ্চা তো নড়াচড়া করছে। সে মনে হয় মরেনি। চল খুলে দেখি।' এরপর বাচ্চার বাবা জাহাঙ্গীর আলম কাফনের কাপড় খুলে দেখেন নবজাতক বাচ্চাটি নড়াচড়া করছে। মুখ হাঁ করে খাবার খাওয়ার জন্য ছটফট করছে।
শিক্ষার্থীরা আরো জানান, এ অবস্থা দেখে সবাই মিলে বাচ্চাকে নিয়ে হাসপাতালে আসেন। হাসপাতালে আসার পর যে ডাক্তার ডেথ সার্টিফিকেট দিয়েছেন, তার সহকারী জিল্লুর রহমান ডেথ সার্টিফিকেটটি ছিনিয়ে নিয়ে উধাও হয়ে যান।
এ ব্যাপারে বাচ্চার বাবা জাহাঙ্গীর আলম জানান, গতকাল রাত ৮টার দিকে তার স্ত্রী সুলতানা অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভর্তির পর তাকে বিভিন্ন ওষুধ খাওয়ানো হয়। রাত সাড়ে ১০টার দিকে একটি ছেলে বাচ্চা প্রসব করেন তিনি। প্রসবের পর বাচ্চাটিকে আইসিইউতে না রেখে ২১৩ নম্বর ওয়ার্ডের ১৩ নম্বর কেবিনে রাখা হয়। শনিবার সকালে ডাক্তার ওই বাচ্চাটিকে ডেথ সার্টিফিকেট প্রদান করেন। আজিমপুর কবরস্থানে কবর দিতে নিয়ে গেলে তার বাচ্চাটি নড়েচড়ে ওঠে।
নবজাতকের ব্যাপারে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান জানান, এটি একটি অনাকাঙ্খিত ঘটনা। কোন ডাক্তার ভালো করে যাচাই না করেই ডেথ সার্টিফিকেট দিয়েছেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বর্তমানে বাচ্চাটিকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/ ৩১ জানুয়ারি ২০১৫/ আহমেদ