সংঘর্ষে মাথা ফেটেছে অন্তঃসত্বা হাফসা বেগমের। একে তো প্রসব বেদনা, তার উপর কপাল দিয়ে গড়িয়ে পড়ছে রক্ত। তাকে উদ্ধার করে আনা হয় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এ অবস্থায় একটি ছেলে সন্তানের জন্ম দেন হাফসা। আর তার নাম রাখা হয় সংঘর্ষ। সংঘর্ষের মধ্য দিয়েই জন্ম, তাই তার নাম সংঘর্ষ। শনিবার দুপুরে রামপাশা গ্রামের অন্তঃসত্বা গৃহবধূ হাফসা বেগম প্রসব ব্যথা নিয়ে সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে যান।
চিকিৎসক তার স্বজনদের হাতে একটি ব্যবস্থাপত্র দিয়ে ওষুধ কিনে আনতে বলেন। হাফসা বেগমের ভাই তুরন মিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সংলগ্ন শানুর আলীর ফার্মেসি থেকে ওষুধ কিনে আনেন।ওষুধ নিয়ে যাওয়ার পর চিকিৎসক জানান ওষুধ ভুল দিয়েছে পাল্টে আনতে হবে। ওষুধ ফেরত দিতে গেলে ফার্মেসি মালিক শানুর মিয়ার সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় তুরন মিয়ার। এ সময় শানুর মিয়ার লোকজন তুরণ মিয়াকে মারধর করেন। একপর্যায়ে শানুর মিয়া ও তার ভাইসহ কাদিপুর গ্রামের লোকজন হাসপাতালের অভ্যন্তরে গিয়ে নারীদের ওপরও হামলা করেন।
হামলাকারীরা অন্তঃসত্বা হাফসা বেগমের মাথায় আঘাত করলে তার মাথা ফেটে যায়। এ অবস্থায় তাকে উদ্ধার সিলেট ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। সংঘর্ষের পর ওসমানী হাসপাতালে হাফসা বেগমের ছেলে জন্মানোর খবর ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়।
এদিকে, রামপাশা গ্রামের লোকজন ফিরে গিয়ে মসজিদে মাইকিং করলে ওই এলাকার লোকজন সংঘবদ্ধ হয়ে কাদিরপুরে এলে দুই গ্রামের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। এতে উভয়পক্ষের অর্ধশতাধিক আহত হয়।
বিশ্বনাথ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম জানান, ওরা অন্তঃসত্বা গৃহবধূর ওপর হামলা করেছে। ঘটনাটি শুনে খুবই খারাপ লেগেছিল। যে কারণে ক্ষোভে আমি নিজেও হামলাকারীদের পিটিয়েছি। হাফসা বেগমের অবস্থা নিয়ে চিন্তিত ছিলাম। যখন শুনেছি তার সন্তান হয়েছে এবং তিনি সুস্থ আছেন, তখন আমি নিজে থেকেই নবজাতকের নাম রেখেছি সংঘর্ষ। কারণ সংঘর্ষের মধ্য দিয়েই পৃথিবীতে আগমন ঘটেছে তার।
বিডি-প্রতিদিন/৫ জুলাই ২০১৫/শরীফ