অস্ত্রোপচার করে শাহনূর নামে এক কিশোরীর পেট থেকে দুই কেজি ওজনের চুলের কুণ্ডলী বের করা হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক তপন কুমার সাহার নেতৃত্বে গত বুধবার চিকিৎসকদের একটি দল ওই অস্ত্রোপচার করেন। ওই কিশোরী শৈশব থেকে চুল খেয়ে আসছিল বলে চিকিৎসকদের মত।
চা বিক্রেতা বাবা বাইরে এবং গৃহকর্মী মা অন্যের বাড়িতে কাজে ব্যস্ত থাকায় ছোটবেলা থেকে নানি সালেহা বেগমের কাছেই থাকত শাহনূর। কিশোরীর নানি বলেন, যখন ডাক্তাররা অস্ত্রোপচারের পর বের করা চুলের কুণ্ডলী দেখাল তখন তা আমি বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না। তবে শাহনূরকে কখনো চুল খেতে দেখেননি বলে জানান তিনি।
ঢাকা মেডিকেলের মনোচিকিৎসক রাশিদুল হক বলেন, 'কোনো ছেলেমেয়েকে নিজের চুল ছিঁড়তে দেখলে বাবা-মায়ের সতর্ক হওয়া এবং চিকিৎসকদের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত। অস্ত্রোপচারের ধকল কাটিয়ে ওঠলে তাকে মনোচিকিৎসকের কাছে পাঠানো হবে।
শাহনূরের মতো অবস্থা সচরাচর দেখা না গেলেও কাউন্সেলিং ও ওষুধের মাধ্যমে তাকে সারিয়ে তোলা সম্ভব। এ ব্যাপারে রশিদুল আরো বলেন, এ ধরনের মানসিক অবস্থাকে বলা হয় ট্রিকোটিলোমেনিয়া। এর মানে মেয়েটি নিজের চুল টেনে ছেঁড়ায় আক্রান্ত। নিজের চুল ছিঁড়ে সে আনন্দ পায়। তবে নিজের চুল ছেঁড়ার এ ধরনের ম্যানিয়ায় অনেকে আক্রান্ত হলেও সবাই চুল খায় না বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্যম ১৫ বছরের কিশোরী শাহনূর গত সাত থেকে আট বছর ধরে নিজের মাথা থেকে চুল ছিঁড়ে খেয়ে এলেও তার বাবা-মা কিছুই জানতেন না। এক পর্যায়ে ওই কিশোরী পেটে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করে। সে খেতেও পারছিল না। জোর করে কিছু খাওয়াতে গেলেই বমি হচ্ছিল। এমন অবস্থায় তাকে চিকিৎসকদের কাছে নিয়ে যান ওই দম্পতি। এরপরেই এ সমস্যা ধরা পড়ে তার।
বিডি-প্রতিদিন/১১ জানুয়ারি ২০১৬/শরীফ