ইরোটিকা হল প্রকৃতপক্ষে যৌন উদ্দীপনামূলক বা যৌন উদ্রেককারী বিষয়ের যে কোন শৈল্পিক কাজ। এবার ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউট এক ডজনেরও বেশি ব্রিটিশ ইরোটিকা প্রকাশ্যে আনলেন৷ 'দ্য প্লেজার প্রিন্সিপল' নামের এই অনলাইন কালেকশন গত শুক্রবার প্রকাশ করলেন বিএফআই৷
নতুনভাবে ডিজিটাইজ করা এই সব ছবি তৈরি হয়েছিল ১৮৯৬ সাল থেকে এই শতকের গোড়ার দিক পর্যন্ত৷ ভিক্টোরিয়ান নারীর ফ্রিল দেওয়া পেটিকোট থেকে শুরু করে সমুদ্রতীরে নগ্ন নারী ছাড়াও ১৯৭০ সালে অভিনেত্রী-মডেল ফিওনা রিচমন্ড-এর সাক্ষাত্কারও আছে এই কালেকশনে৷ বিএফআই-এর কিউরেটার ভিক প্র্যাট বলেছেন এই প্রচেষ্টার পিছনে একটি মহত্ উদ্দেশ্য রয়েছে৷
তিনি বলেছেণ, "আমরা অবৈধ সেলুলয়েড প্লেজারের একটা ধারাবাহিক ইতিহাস দেওয়ার চেষ্টা করেছি৷ একেবারে শুরুর দিন থেকে আজ পর্যন্ত৷ এটা একটা সামাজিক এবং সাংস্কতিক জার্নি হিসেবে দেখলে বুঝতে পারব কী ধরনের ছবি এক সময় তৈরি হয়েছে যা মানুষকে বিব্রত করেছে এক সময়৷"
১৮৯৬ সালে তৈরি হওয়া 'ভিক্টোরিয়ান লেডি ইন হার বোউদয়ে' সম্ভবত সর্বপ্রাচীন ব্রিটিশ ইরোটিক ফিল্ম৷ সেই সময় পেটিকোট পরে হাঁটু অবধি প্রদর্শনই ছিল ইরোটিসিজম-এর সংজ্ঞা৷ ১৯৪৩ সালে তৈরি 'অ্যাকশন ইন স্লো মোশন'-এ নগ্ন নারী ছিল এবং জানানো হয়েছিল এই ছবি কেবলমাত্র দেখতে পাবেন শিল্পীরা৷ যদি অন্য কেউ দেখেন তাহলে তা শাস্তিযোগ্য৷ ১৯৬০ সালে তৈরি পামেলা গ্রিন ছিলেন 'এক্সাইটমেন্ট' ছবিতে৷ সেই সময় ৮ মিলিমিটারে তোলা এই ছবি খয়েরি প্যাকেটে বিক্রি হত৷ এই ছবিগুলি থেকে স্পষ্ট হয় সেই সময় চলচ্চিত্রকারেরা কী ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছিলেন৷ জানা গিয়েছে এই ছবিগুলি মূলত দেখানো হত পুরুষদের প্রাইভেট ক্লাবে৷
বিএফআই কিউরেটর ভিক প্র্যাট বলেছেন, "হয়তো অনেকেই এই সব ছবি দেখে ভুঁরু কুচকাবেন৷ কিন্তু আমাদের এই ছবিগুলোর দিকে নজর দেওয়া অত্যন্ত আবশ্যক৷ কারণ, এই ছবিগুলি দেখলে আমরা আমাদের নিজেদের সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারব৷ আমাদের সমাজ ইতিহাসে এই ছবিগুলি খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে৷ অনেক মানুষ এই ছবিগুলিকে সেইভাবে স্বীকৃতি দেয়নি, কিন্ত্ত আমার মনে হয় সেই দৃষ্টিভঙ্গি এবার বদলানোর সময় এসেছে৷ অনেকেই এই ছবিগুলি দেখলে বুঝতে পারবেন আমাদের সমাজ কীভাবে বদলেছে এবং কীভাবে অনেক কিছু আবার বদলায়ওনি৷"
বিএফআই-এর এক প্রতিনিধি বলেন, "কিছু দিনের মধ্যেই এই কালেকশনে যুক্ত হবে ১৯৭৯ সালে তৈরি হওয়া 'বয়েজ অ্যান্ড গার্লস টুগেদার' ছবিটি৷ নানা জাতের একদঙ্গল মানুষ কীভাবে একটি বাড়িতে যৌন-শোষিত হচ্ছে তারই ইতিবৃত্ত এই ছবি৷ এটিই সম্ভবত প্রথম সার্টিফায়েড সেই ছবি যেখানে সমকামী মানুষদের সেক্স করতে দেখা যাচ্ছে৷"
বিডি-প্রতিদিন/৭ ডিসেম্বর, ২০১৬/তাফসীর-১১