কুমারীত্ব ফিরে পেতে ভারতের হায়দ্রাবাদে প্লাস্টিক সার্জারির হিড়িক পড়েছে! ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া কয়েকটি ঘটনার উদ্বৃতি দিয়ে এ খবর প্রকাশ করেছে।
খবরে বলা হয়, কয়েকমাস আগে ভারতের তেলেঙ্গানা প্রদেশের হায়দ্রাবাদের অভিজাত শহুরে এলাকা বানজারা হিলসের বাসিন্দা হেমান্থা তার মেয়েকে বিয়ের কয়েকদিন আগে নিয়ে যান একজন প্লাস্টিক সার্জনের কাছে। তিনি ডাক্তারকে তার মেয়ের হাইমেনটি পুনস্থাপন করে দিতে বলেন। তার মেয়ে ছিলেন একজন ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড়।
হেমান্থা বলেন, “আমি আমার মেয়েকে হাইমেনোপ্লাস্টি করাতে নিয়ে যাই এই ভয়ে যে, বিয়ের পর যদি তার স্বামী তাকে কুমারি না ভাবেন তাহলে তার দাম্পত্য জীবনে সমস্যা হতে পারে।”
এদিকে ওই শহরের ডাক্তাররা বলেছেন, হেমান্থা একাই নন বরং এমন অনেকে, বিশেষকরে ২০-৩০ বছর বয়সী অনেক নারী ৪০ মিনিটের ওই অপারেশনের মাধ্যমে তাদের ছিড়ে যাওয়া হাইমেন জোড়া লাগাতে এসেছেন তাদের কাছে।
সানশাইন হাসপাতালের প্লাস্টিক সার্জন ড. ভবানি প্রসাদ বলেন, তিনি এখন প্রতি বছর এমন ৫০টি অপারেশন করান। অথচ আগে এমন অপারেশন বছরে মাত্র দুই থেকে তিনটি করতেন।
তিনি বলেন, “আমাদের সমাজে, অনেক নারীই মনে করেন দাম্পত্য জীবনে শুভ সুচনার জন্য হাইমেন অক্ষত রাখাটা একটি জরুরি বিষয়। তাদের ধারণা তাদের স্বামীরা যত আধুনিকই হোক না কেন, তারা তাদেরকে কুমারি হিসেবে পেতেই প্রত্যাশা করেন।”
এই অপরেশন প্রক্রিয়ায় নারীদের জননাঙ্গে এক ইঞ্চির একটি ঝিল্লি সৃষ্টি করতে হয়। জননাঙ্গের আস্তরণ থেকে গৃহীত মাংসের ছাল থেকে এই ঝিল্লি সৃষ্টি করতে হয়। এই অপারেশনের পর তা দ্রুত সেরে উঠে এবং কোনো দাগ পড়ে না। অবশ্য, যদিও রোগীদেরকে অপারেশনের কয়েক সপ্তাহ পর পর্যন্ত কোনো ধরনের ব্যায়াম করতে নিষেধ করা হয়।
ডাক্তারদের তথ্য মতে, শুধু যারা বিয়ের আগে যৌন মিলন করেছেন এমন নারীরাই নন বরং যৌন মিলন ছাড়াও যাদের হাইমেন ছিড়ে গেছে তারাও এই অপারেশন করাতে আসেন। হাইমেন হলো নারী জননাঙ্গের প্রবেশ পথের পাতলা একটি পর্দা যা ভারি ব্যায়াম, দৌঁড়ঝাপ বা নাচানাচির কারণেও ছিড়েও যেতে পারে। আর প্রথমবার যৌন মিলনের সময়ও এই পর্দাটি ছিড়ে যায়। ঐতিহ্যগতভাবে একে নারীদের কুমারিত্বের চিহ্ন হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
ডাক্তারার আরও জানান, ভেজাইনোপ্লাস্টি বা সন্তান প্রসবের পর নারীদের জননাঙ্গের মাংসপেশী সরু করার জন্য প্লাস্টিক সার্জারির চাহিদাও দিনকে দিন বেড়ে চলেছে। ৩৫ বছরের বেশি বয়সী নারীদের মধ্যে ভেজাইনোপ্লাস্টির চাহিদা বেড়ে চলেছে। সুচরিতা নামে ৪০ বছর বয়সী এক কর্পোরেট কর্মী বলেন, “আমার স্বামী তার ডাক্তারের কাছে এই সার্জারির কথা শোনার পর আমাকেও তা করাতে বলেন”।
বিডি প্রতিদিন/১৩ জানুয়ারি ২০১৭/হিমেল