ভুটানের জঙ্গল থেকে আসা হাতির পাল গ্রাম তছনছ করতো। হাতির ভয়ে বারবার পালিয়ে গাছে উঠতে হতো। চোখের সামনে দেখতে হতো, হাতে গড়া ঘর কীভাবে ভেঙে চুরে তছনছ করে হাতির পাল। এভাবে অনেক বছর কাটানোর পরে আসামের বাক্সা জেলার মুসলপুরের বাসিন্দা বিজয় ব্রহ্মের বিতৃষ্ণা ধরে যায় মাটির জীবনে। তাই গাছের উপরেই থাকা শুরু করেন তিনি। গত ১৩ বছর ধরে গাছের উপরে বাস করা বিজয়কে গ্রামের মানুষ এখন ‘বনমানুষ’ বলেই ডাকে।
বিজয় বলেন, মানুষের সংস্পর্শে আসতে পছন্দ করেন না তেমন। ছোটবেলায় অনাথ হওয়ার পরে তিনি অন্যের বাড়িতে কাজ করতেন। চৌকি বনাঞ্চলের কাছে তার বাড়ি ছিল। একলা মানুষ, তাই ছোট্ট ঘরই ছিল তার সম্বল। কিন্তু সেটাও প্রায়ই ভেঙে দিতো হাতিরা।
বিজয় আরও বলেন, বারবার এই ঘটনার পরে ভাবলাম রাত নামলে যখন হাতির ভয়ে গাছেই উঠতে হয়, তখন খামাকা মাটিতে ঘর গড়ে কী লাভ? তাই কাঠ, তক্তা জোগাড় করে বনে গাছের উপরেই ছোট্ট ঘর তৈরি করে ফেলি।
এরপর অন্যের বাড়ির কাজও ছেড়ে দেন। জঙ্গলে যা পাওয়া যায় তাই খেয়ে থাকতেন তিনি। বছয় ছয়েক চৌকি বনাঞ্চলের ভিতরে থাকার পরে পাগলাদিয়া নদীর পারে খৈরানি পথারের কাছে নতুন একটি গাছে বাসা বেঁধেছেন বিজয়। সেখানেও প্রায় সাত বছর হতে চলল। বলেন, বনের আলু, কচু, শাক, নদীর মাছ, শামুক, কাঁকড়া- যা পান তা খেয়েই দিব্যি দিন কেটে যাচ্ছে। একা মানুষের আর কি চাওয়ার থাকতে পারে? সূত্র: আনন্দবাজার
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত