পরাজয়কে মেনে নেয়ার যে সাংস্কৃতিক যোগ্যতা - দুঃখজনক যে আমাদের প্রধান দুটি রাজনৈতিক দল - আওয়ামী লীগ ও বিএনপি কারোরই তা নেই। বর্তমান রাজনৈতিক সংকটের এ এক বড় কারণ; তারা শুধু জয় আকাঙ্ক্ষা করে এবং শেষ বিচারে কেবলই জিততে চায়; অথচ জনতার আদালতে তারা যে হেরে বসে আছে - হায় আফসোস! সে সত্যও তারা জানে না! বাংলাদেশে এখন যা চলছে তাকে বলা যায় “Politics of annihilation”: সর্বাত্মক ধ্বংসের রাজনীতি; এক দল আরেক দলের ধ্বংস চাইছে; অন্য দলের ধ্বংসস্তূপ আর ছাই-ভস্মের উপর নিজের বিজয় কেতন ওড়াতে চাইছে; লক্ষ্য অর্জনে তারা মরিয়া ও যারপরনাই বেপরোয়া। ব্রিটিশ রাজনৈতিক দার্শনিক টমাস হবস (১৫৮৮-১৬৭৯) যাকে বলেছেন “war of all against all” সেটাই যেন চলছে এখন! প্রত্যেকে যেন প্রত্যেকের সঙ্গে এবং সবাই যেন সবার সঙ্গে এক অলিখিত যুদ্ধে অবতীর্ণ। হবসের ভাষায় “in every second man is your enemy, potential enemy”; প্রত্যেকে প্রত্যেকের এবং সবাই সবার শত্রু, সম্ভাব্য শত্রু; কী ভয়ংকর! চারদিকে কেবল সন্দেহ, অবিশ্বাস আর শঙ্কা; কেমন এক দ্বিধান্বিত গুমোট অবস্থা। মানুষ কেন রাষ্ট্র বানায়? উত্তরে আপনারা নিশ্চয়ই বলবেন, মানুষ রাষ্ট্র বানায় মূলত তিনটি কারণে: এক. রাজনৈতিক/ভ‚খণ্ডগত সার্বভৌমত্ব অর্জনের লক্ষ্যে দুই. জীবন/বেঁচে থাকার নিরাপত্তা পাবে এই প্রত্যাশায় তিন. জীবিকা/অর্থনৈতিক নিরাপত্তার জন্য। বর্তমান রাষ্ট্র ব্যবস্থায় সে লক্ষ্য কতোট অর্জিত হচ্ছে? নাকি আমরা আবার রাষ্ট্র্রপূর্ব অবস্থায় ফিরে যাচ্ছি? প্রশ্ন রইলো বাংলাদেশ প্রতিদিন-এর অগ্রসর পাঠকের কাছে।
রোবায়েত ফেরদৌস: সহযোগী অধ্যাপক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
বিডি-প্রতিদিন/ ১০ জানুয়ারি, ২০১৫/ রশিদা