জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) দাবিকৃত চাঁদা না পেয়ে এক চায়ের দোকান বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে।বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলে এমন ঘটনা ঘটেছে।চাঁদা দিতে না পেরে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দোকানটি বন্ধ করে দিয়েছেন দোকানদার।তবে ছাত্রলীগ নেতাদের ভয়ে এ বিষয়ে কোনো কথা বলেননি সেই দোকানদার।
হলের ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের সূত্রে জানা যায়, গত আগস্টে চালু হয় বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হল। এরপর মো. হেলাল নামের ব্যক্তিকে একটি চায়ের দোকান বরাদ্দ দেয় হল প্রশাসন। গত ২৭ নভেম্বর রাতে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন ও সহ-সভাপতি আসাদুজ্জামান আশিকের নির্দেশে সহ-সভাপতি এস.এম. কিবরিয়া সায়মন ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে দোকানদার হেলালের কাছে। হেলাল ২৫ হাজার টাকা দিতে সম্মত হলে এতে সন্তুষ্ট হয়নি ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা।
পরবর্তীতে বৃহস্পতিবারের মধ্যেই দোকান গুটিয়ে নেওয়ার জন্য ক্রমাগত চাপ দিতে থাকে সাদ্দাম হোসেনের অনুসারীরা।হেলালের কাছে চাঁদা দাবির সময় ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা ক্যান্টিন থেকে এক লাখ, আরেকটি চা দোকান থেকে ৪৫ হাজার, লন্ড্রি থেকে ৩০ হাজার, ব্রডব্যান্ড সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা চাঁদা নেওয়ার উদাহরণ টেনে তার কাছ থেকেও চাঁদা দাবি করে।
তবে সায়মন ও আশিক উভয়েই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। আশিক বলেন, “আমি বিসিএসের পড়াশুনা নিয়ে ব্যস্ত আছি। হলের রাজনীতি সম্পর্কিত কিছু বলতে পারবো না।” আর সায়মন এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে জানান।
জানতে চাইলে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. সাদ্দাম হোসেন বলেন, “দোকানদার হেলাল অনুমোদন না নিয়ে ভ্রাম্যমাণ দোকান দিয়েছিল। তাই আগামী মাস থেকে অনুমোদন নিয়ে আরেকজন ওই দোকান চালাবে।”
তবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের প্রাধ্যক্ষ বলেন, “হেলাল অনুমতি নিয়েই দোকান চালাচ্ছিল। হলের ভেতরে কারো পক্ষেই অনুমোদন ছাড়া দোকান চালানো সম্ভব না।” আর চাঁদা দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, “হলের ভেতরে ছাত্ররা কে কি করছে সে সম্পর্কে আমি কিছু বলতে পারবো না।”
এসব বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান চঞ্চল বলেন, “ছাত্রলীগ সর্বদা চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে কাজ করে। যদি এমনটি কেউ করে থাকে তবে প্রমাণ পেলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
প্রসঙ্গত, গত ঈদুল ফিতরের আগে চাঁদা না পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টারের সামনের ভ্রাম্যমাণ কাপড়ের দোকান উচ্ছেদের অভিযোগ রয়েছে সাদ্দাম হোসেন ও আসাদুজ্জামান আশিকের বিরুদ্ধে। এর আগে গত এপ্রিলে আল বেরুনী হল সম্প্রসারিত ভবনে পছন্দের ব্যক্তিকে নিয়োগ না দেওয়ায় হল ভাঙচুর ও অফিস বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।
বিডিপ্রতিদিন/ ৩০ নভেম্বর, ২০১৭/ ই জাহান