অতিথি পাখির ক্যাম্পাস হিসেবে খ্যাত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি)। প্রতি বছর শীত মৌসুমে ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখির আগমন ঘটে এখানে। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ধীরে ধীরে পাখির সংখ্যা কমছে। কোলাহলে বিরক্ত হয়ে এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের দু'টি লেক হয়ে পড়েছে পাখি শূন্য। বর্তমানে শুধু জিমনেশিয়ামের পাশের লেকে কিছু সংখ্যক পাখির দেখা মেলে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায়িত্বে অবহেলায় সেটিও এখন পাখি শূন্য হওয়ার পথে।
রবিবার সন্ধ্যা থেকে জিমনেশিয়ামের সামনে জাবির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪২তম আবর্তনের শিক্ষার্থীদের উচ্চস্বরে গান বাজানো, ক্যাম্পফায়ার এবং বাজি-পটকা ফোটাতে দেখে গেছে। জানা যায়, সন্ধ্যা থেকেই তারা এগুলো করছেন। সর্বশেষ রাত সাড়ে দশটায় কোনো ধরণের বাধা-বিঘ্ন ছাড়াই সফলভাবে অনুষ্ঠান শেষ করে স্থান ত্যাগ করে শিক্ষার্থীরা।
যদিও থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষ্যে আজ রাতে ক্যাম্পাসে কোন প্রকার ক্যাম্পফায়ার, আতশবাজি ফোটানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে নোটিশ প্রদান করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এছাড়া নোটিশে রাত ১১টার মধ্যে শিক্ষার্থীদেরকে যার যার আবাসিক হলে ফেরত যাওয়ারও নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
জিমনেশিয়ামের সামনে এ ধরণের কর্মকান্ডের বিষয়ে প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহীনকে অবহিত করলে তিনি বলেন, "আমি সন্ধ্যা থেকেই এ বিষয়ে অবগত আছি। কিন্তু এটি প্রক্টরিয়াল টিমের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। এ বিষয়ে আমাদের কোনো এখতিয়ার নেই। তবে প্রক্টর স্যারকে বিষয়টি জানিয়েছি।"
এই প্রতিবেদক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক তপন কুমার সাহা কে বিষয়টি অবহিত করলে তিনি ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান। কিন্তু অবহিত করার পর এক ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে দেখা যায়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিভিন্ন দায়িত্বরত ব্যক্তি, শিক্ষক ও কর্মচারিরা সন্ধ্যা থেকে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত (রাত ১০টা ৪৫ মিনিট) বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়াতে থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষ্যে আনন্দ আড্ডায় ব্যাস্ত ছিলেন।
এদিকে, এক শিক্ষার্থী এই বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে বলেন, "প্রশাসনের নাকের ডগায় বসে কিভাবে ঝাকানাকা গান বাজায় তা কিছুতেই মাথায় আসে না।" বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সেই স্ট্যাটাসে ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। এক শিক্ষার্থী বলেন, "ক্যাম্পাসে ক্যাম্পফায়ার করার মত জায়গার কী অভাব হয়ে গেছে নাকি? যে ওখানে (জিমনেশিয়াম এর সামনে) করতে হবে।"
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার