বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে শুধু একজন ভালো শিক্ষার্থী হলে হবে না। তাকে অবশ্যই সত্য বলার, সত্য লিখার, সত্যের পক্ষে কাজ করার সাহসও থাকতে হবে। উপরন্তু তাকে সত্যের সৈনিক হতে হবে। সত্যের মাধ্যমে এগিয়ে যেতে হবে। সত্য দিয়ে পৃথিবীকে জয় করতে হবে। শিক্ষার মূল লক্ষ্য হলো মানুষের মনুষ্যত্বকে জাগ্রত করা বলেও উল্লেখ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।
মঙ্গলবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের সম্মিলিত দুইদিনব্যাপী ১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের নবীনবরণ ও ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠানে ওরিয়েন্টেশন বক্তার বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আরেফিন সিদ্দিক আরও বলেন, নবীন শিক্ষার্থীরাই হচ্ছে দেশের শ্রেষ্ঠ সম্পদ। তরুণ শিক্ষার্থীরা নিজেদেরকে শ্রেষ্ঠ সম্পদে পরিণত করে এদেশকে তৈরি করতে পারে একটি সোনার দেশে। একটি ভর্তি যুদ্ধের মাধ্যমে তোমরা তোমাদের যোগ্যতা প্রমাণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছ। বর্তমানকে গুরুত্ব দিয়ে ভবিষ্যৎ নির্মাণ করতে হবে। ভবিষ্যৎ নির্মাণ করায় হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ। বিশ্ববিদ্যালয় একটি পবিত্র জায়গা, কারণ এখানে সত্যকে নিয়ে কাজ করা হয়। আমাদের প্রত্যেককে সত্যের প্রতীক হতে হবে এবং নিজেদেরকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে। এ সময় তিনি আয়োজকবৃন্দকে বিশেষ ধন্যবাদ জানান।
সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. ফরিদ উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) উপাচার্য প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজ ক্যাম্পাসে তোমাদের স্বাগতম। তোমাদের পদাচারণায় মুখরিত এ ক্যাম্পাস। তোমরাই এখন এ ক্যাম্পাসের নতুন অতিথি।
তিনি আরো বলেন, নবীন শিক্ষার্থীরা আগামীর ভবিষ্যৎ। তাদের হাত ধরেই এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে জ্ঞান সৃজনের জায়গা। এখান থেকেই আবিষ্কৃত হয় নতুন নতুন আবিষ্কার। তিনি আধুনিক বিজ্ঞানমনস্ক এবং গুণগত শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান করেন।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন বছরের উল্লেখযোগ্য কর্মকাণ্ড তুলে ধরে চবি উপাচার্য বলেন, আমরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যমান ভর্তি বাণিজ্য, নিয়োগ বাণিজ্য, টেন্ডার বাণিজ্যসহ যাবতীয় অনিয়ম বন্ধ করে বিশ্ববিদ্যালয়কে দুর্নীতিমুক্ত রেখেছি। সকল শিক্ষার্থীকে দুর্নীতি ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহবানও জানান তিনি।
অনুষদের ইংরেজি প্রভাষক সাদেকুল ইসলাম ও আসমা আক্তার জেরিন এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন অনুষ্ঠানের সভাপতি ও সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। আরও শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন অনুষদের নয়টি বিভাগের সভাপতিবৃন্দ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা বিষয়ক বিভিন্ন নিয়ম-কানুন ও দিক-নির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর ড. মুস্তাফিজুর রহমান ছিদ্দিকী। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা বিষয়ে বক্তব্য রাখেন চবি প্রক্টর প্রফেসর আলী আজগর চৌধুরী। ছাত্র-ছাত্রীদের বিভিন্ন সমস্যা ও পরামর্শ বিষয়ক বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী পরামর্শ ও নির্দেশনা বিষয়ক পরিচালক প্রফেসর ড. আহমদ সালাউদ্দিন।
অনুষ্ঠানের মেয়েদের হলজীবন এবং হলের বিভিন্ন নিয়ম-কানুন নিয়ে বক্তব্য রাখেন চবি শামসুন নাহার হলের প্রভোস্ট ড. লায়লা খালেদা (আঁখি)। ছেলেদের হলজীবন ও হলের বিভিন্ন নিয়ম-কানুন নিয়ে বক্তব্য রাখেন চবি আলাওল হলের প্রভোস্ট প্রফেসর আবদুল হক।
বিডি-প্রতিদিন/২৯ জানুয়ারি, ২০১৯/মাহবুব