একে একে কেটে গেছে পাঁচটি বছর। বছর ঘুরে ১৪ ডিসেম্বর আসলেই স্মৃতি নিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তাপসের পরিবার। এ দিনে প্রতিবছরই নানামুখী আন্দোলনে নামে তাপসের সহপাঠি ছাত্রলীগ নেতারা। কিন্তু দীর্ঘ পাঁচ বছরেও বিচার হয়নি এ হত্যাকাণ্ডের।
এখানো সে মামলা বিচারাধীন। আজ থেকে পাঁচ বছর আগে প্রতিপক্ষের ছোড়া গুলিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আমানত হলের ৩ তলায় খুন হন তাপস সরকার। দীর্ঘ সময় কেটে গেলেও বিচার না হওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন তাপসের পরিবার।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগের ২০১৩-১৪ সেশনের শিক্ষার্থী ছিলেন তাপস সরকার। বাড়ি সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলায়। বাবার নাম বাবুল সরকার। তাপস পরিবারের পাঁচ সন্তানের মধ্যে তৃতীয়।
জানা যায়, ২০১৪ সালের ১৪ ডিসেম্বর সকাল ১০টায় বুদ্ধিজীবী চত্বরে ফুল দেওয়াকে কেন্দ্র করে শাখা ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এক পর্যায়ে হাতাহাতি সংঘর্ষে রূপ নেয়। পরে দুই পক্ষ শাহজালাল ও শাহ আমানত হলে অবস্থান নিয়ে উভয় পক্ষ ব্যাপক সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এক পক্ষের নেতার ছোড়া গুলিতে খুন হয় তাপস। তাপস খুন হওয়ার পর দুটি মামলা দায়ের করা হয়। একটিতে পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে অস্ত্র আইনে মামলা করে হাটহাজারী থানা পুলিশ। সেখানে অজ্ঞাতনামা ৬০ জনকে আসামি করা হয়। আরেকটি হাটহাজারী থানায় হত্যা মামলা করেন তাপসের সহপাঠী হাফিজুল ইসলাম। এই মামলায় ৩০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়।
এদিকে, ২০১৬ সালের ২ মে শাখা ছাত্রলীগের ২৯ নেতা-কর্মীর নামে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ ব্যুারো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। অভিযোগে বলা হয়, আশরাফুজ্জামান আশার ব্যবহার করা পিস্তলের গুলিতেই খুন হন তাপস। আশা এখন পালাতক রয়েছে।
২০১৪ সালে তাপস হত্যার পর থেকে নানা আন্দোলন করে আসছে তার সহপাঠি ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। পরে সর্বশেষ ‘শহীদ তাপস স্মৃতি সংসদ’ নামে একটি সংগঠনেরও যাত্রা করে তারা। এ সংগঠনের ব্যানারে গত এক মাসে ১০টির ও বেশি কর্মসূচি পালন করে আসছে। এসব কিছুর পরেও তাপস হত্যার আসামিরা এখনো ক্যাম্পাসে অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছে বলে দাবি তাপস স্মৃতি সংসদের।
শহীদ তাপস স্মৃতি সংসদের আহ্বায়ক শরিফ উদ্দিন বলেন, সব হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়, শুধু তাপস হত্যার বিচার হয় না। আসামিরাও ক্যাম্পাসে অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছে। পুলিশ ও প্রশাসন দেখেও যেন তারা অন্ধ।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল