ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুরের প্রতিবাদ সভায় হামলার জেরে গতকাল বুধবার পাল্টিপাল্টি কর্মসূচি পালন করেছে ‘সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষদ’ ও ‘মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ’। দুপুরে রাজু ভাস্কর্য থেকে একটি মিছিল নিয়ে শাহবাগ থানার সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে ভিপি নুরের সংগঠন সাধারণ ছাত্র পরিষদ। অন্যদিকে নুরকে ‘প্রতিহত করতে’ ক্যাম্পাসে লাঠি-সোটা নিয়ে শো-ডাউন দেয় মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের নেতাকর্মীরা।
এদিকে, ভারতে সংশোধিত নাগরিকত্ব বিলের বিরুদ্ধে চলা আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাতে মঙ্গলবার ভিপি নুরের সমাবেশে হামলার ঘটনায় শাহবাগ থানায় একটি মামলা ও সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। বুধবার দুপুর ১২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে জড়ো হয়ে শ্লোগান দিতে থাকে সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা। একই সময় মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের নেতাকর্মীরাও জড়ো হয়ে পাল্টা শ্লোগান দিতে থাকে। এক পর্যায়ে রাজু ভাস্কর্য দখলে নেয় সাধারণ ছাত্র পরিষদের নেতাকর্মীরা।
মিছিলের শুরুতে ভিপি নুর বলেন, আত্মরক্ষা নিজেদের করতে হবে। দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বের প্রশ্নের লক্ষ্যে লড়াই করতে হবে। ভারতের বিরুদ্ধে কথা বলতে গিয়ে আর কোন আবরারকে যেন মৃত্যুরবণ করতে না হয় সেজন্য বাংলার ছাত্র সমাজকে সোচ্চার হতে হবে।
তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার ৪৮ বছর পর মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নাম করে যারা ভণ্ডামি করে বেড়াচ্ছে, প্রতিবাদী মানুষের ওপর হামলা-মামলা চালাচ্ছে, এদের ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে। এই গণতন্ত্র-বিচারহীনতা দেখার জন্য ৩০ লাখ শহীদ জীবন দেননি।’ ছাত্রসমাজ জীবন দিয়ে ভারতীয় আগ্রাসন মোকাবেলা করবে বলেও ঘোষণা দেন তিনি।
পরে একটি বিক্ষোভ মিছিল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও হাইকোর্টের সামনে দিয়ে শাহবাগ থানার সামনে অবস্থান নেয়। পরে সেখানে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে কর্মসূচির সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
নুরকে ঠেকাতে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের লাঠি মিছিল
এদিকে, নুরের সমাবেশ ঠেকাতে দুপুরে লাঠি-সোটা হাতে রাজু ভাস্কর্যের সামনে অবস্থান নেয় মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের নেতাকর্মীরা। এসময় তাদের স্টিলের পাইপ, হকিস্টিক, লাঠি ও ইট বহন করতে দেখা যায়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টরগণ এসে তাদের লাঠি-সোটা ফেলে দেওয়ার অনুরোধ করেন। সহকারী প্রক্টর আবদুর রহীম তাদের কাছ থেকে কিছু লাঠি নিয়ে নেন।
পরে দুপুর ২টার দিকে তাদের মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে সংগঠনটির নেতারা নুর ও তার সংগঠনকে জামায়াত-শিবিরের এজেন্ট আখ্যা দিয়ে তাকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন। মানববন্ধন শেষে সেখান থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে। এতে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল, সাধারণ সম্পাদক মো. আল মামুনসহ সংগঠনটির অন্যান্য নেতৃবৃন্দ অংশ নেন।
মামলা ও সাধারণ ডায়েরি
এদিকে মঙ্গলবারের হামলার ঘটনায় মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল, সাধারণ সম্পাদক আল মামুনসহ সংগঠনটির অজ্ঞাত ৩০-৩৫ জনের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় মামলা করেছে ভিপি নুরুল হক নুর। অন্যদিকে, সংগঠনের নেতাকর্মীদের উপর হামলার অভিযোগ এনে শাহবাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক