চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরীর আমলে অনিয়ম, দুর্নীতি ও নিয়ম বহির্ভূতভাবে ১৪২ জন কর্মচারী নিয়োগের অভিযোগে সংশ্লিষ্ট ৮ শিক্ষকসহ ৪৬ জনকে তলব করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তাদের মধ্যে ১১ জন নিয়োগদাতা এবং নিয়োগপ্রাপ্ত ৩৫ জন কর্মচারী।
এদিকে গত ১৪ ডিসেম্বর দুদক থেকে ৪৬ কর্মচারীর বেতন-ভাতার তথ্য চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর চিঠি দিওয়া হয়। চিঠিতে ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে এসব তথ্য জমা দিতে বলা হলেও এখনো তথ্য জমা দিতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ফলে এখনো কাটেনি দুদকের আতঙ্ক।
এর আগে ২০১৯ সালের ২৩ জুলাই দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-১ এর সহকারী পরিচালক মো. ফখরুল ইসলামের স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে ৪৬ জন শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে ২২ আগস্ট নির্ধারিত সময়ে দুদক কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে অভিযোগ অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তার কাছে নিজেদের বক্তব্য দিতে বলা হয়। এতে বক্তব্য দিতে গিয়ে সরকারি টাকায় ভূরিভোজ করার অভিযোগ উঠেছে এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। নগরীর আগ্রাবাদের একটি হোটেলে দুপুরের খাবার খেয়ে বিল করেছেন ৫ হাজার ৩৯৬ টাকা। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ও হিসাব নিয়ামকের স্বাক্ষর সম্বলিত ভাউচারে এ বিলকে জনবল নিয়োগ সভার আপ্যায়ন বিল হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
প্রসঙ্গত, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের নিদের্শনা উপেক্ষা করে গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর ৫১৯ তম সিন্ডিকেট সভায় তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী পদে স্থায়ী ও অস্থায়ী ভিত্তিতে ১৪২ জনকে নিয়োগের অনুমোদন দেওয়া হয়। কিন্তু তাদের পদ ও বিভাগ সম্পর্কে সিন্ডিকেটকে জানানো হয়নি। নানা অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কৃত, অস্ত্রধারীও এ সময় নিয়োগ পেয়েছেন। স্বজনপ্রীতিসহ এমনকি চাকরির জন্য আবেদন না করেও নিয়োগ পাওয়ার অনিয়মের অভিযোগও ওঠে।
গত ২১ মে নিয়োগ কমিটির দুর্নীতি ও অনিয়ম তদন্ত করতে দুই সদস্যের একটি তদন্ত টিম গঠন করে দুদক। বিভাগীয় পরিচালক মো. আবদুল করিমের স্বাক্ষরে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি ইস্যু করা হয়। দুদক সমন্বিত চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়-২ এর উপ-পরিচালক মুহা. মাহবুবুল আলমকে প্রধান করে এ তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্ত টিমে সদস্য রাখা হয়েছে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়-২ এর উপ-সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিনকে। দুদকের বিভাগীয় পরিচালক মো. আবদুল করিম তদারকি কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করবেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দুদকের (চট্টগ্রাম) সহকারী পরিচালক ফখরুল ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যে তথ্য চেয়েছিলাম নির্দিষ্ট তারিখ পার হয়ে গেলেও তা এখনো পায়নি। আশা করি খুব শিগগরিই পাব।’
বিডি প্রতিদিন/হিমেল