হাজারো ব্যস্ততায় হাঁপিয়ে উঠা শহুরে জীবনে ইচ্ছে হলেই প্রকৃতির খুব কাছাকাছি চলে যাওয়া একটু কঠিনই বটে। আর যদি এমনটা চান যে, আপনার চারপাশে অসংখ্য প্রজাপতি একসাথে উড়াউড়ি করছে তবে সেটিকে দিবাস্বপ্ন ছাড়া আর কিছুই বলা যাবে না। তবে এই দিবাস্বপ্নকেই যেন বাস্তবে রূপ দিয়েছে রাজধানীর অদূরে অবস্থিত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি)।
‘উড়লে আকাশে প্রজাপতি, প্রকৃতি পায় নতুন গতি’ এই স্লোগানে ১১তম বারের মত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হয় প্রজাপতি মেলা। শুক্রবার অনুষ্ঠিত এই মেলায় সব বয়সের মানুষের পদচারণায় উৎসবমুখর হয়ে উঠে পুরো ক্যাম্পাস। বিশেষ করে শিশু কিশোরদের উপস্থিতি মেলায় যোগ করে অন্যরকম মাত্রা। জাবির প্রাণিবিদ্যা বিভাগের উদ্যোগে ২০১০ সাল থেকে নিয়মিত আয়োজিত হয়ে আসছে ব্যতিক্রমী এই প্রজাপতি মেলা।
বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনের সামনে বেলুন উড়িয়ে এই মেলার উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. রাশেদা আখতার। এই সময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘কীট-পতঙ্গ এবং জীব বৈচিত্র্য রক্ষার জন্য প্রকৃতি, মানুষ এবং সামাজিক পরিবেশকে রক্ষা করতে হবে। এ জন্য সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। পরিবেশের সুরক্ষা নিশ্চিত করে উন্নয়ন চিন্তা করতে হবে।’
মেলার আহবায়ক প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মনোয়ার হোসেন বলেন, ‘প্রজাপতিকে রক্ষা করার জন্য প্রাকৃতিক পরিবেশকে বাঁচাতে হবে। পরিবেশ-প্রকৃতি সুরক্ষিত না হলে প্রজাপতি বাঁচবে না। আগে বাংলাদেশে সাড়ে তিন শত থেকে চার শত প্রজাতির প্রজাপতি লক্ষ করা যেত। সেই সংখ্যা এখন কমে এসেছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে লক্ষ করা যেত একশ' বিশ প্রজাতির প্রজাপতি। এখন এই সংখ্যা নেমে এসেছে ষাটে। মানুষ প্রকৃতি মনস্ক হলে প্রকৃতি সুরক্ষিত থাকবে। প্রকৃতি সুরক্ষার জন্য বনাঞ্চল ও সবুজ বনভূমি রক্ষা করতে হবে।’
দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত মেলায় চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, কুইজ, বক্তৃতা, প্রজাপতি বিষয়ক বির্তক প্রতিযোগিতা, প্রজাপতির ডকুমেন্টারি প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রজাতি সংরক্ষণে বিশেষ অবদানের জন্য সিরাজগঞ্জের কলেজ শিক্ষক মো. হাসমত আলীকে ‘বাটার ফ্লাই এ্যাওয়ার্ড ২০২১’ প্রদান করা হয়। বাটার ফ্লাই ইয়াং ইনথুসিয়াস্ট এ্যাওয়ার্ড লাভ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান সমী।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল