খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রফেসর ড. মো. সেলিম হোসেনের মৃত্যুর ঘটনায় ছাত্রলীগের কুয়েট শাখার সাধারণ সম্পাদকসহ চার শিক্ষার্থীকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়া আরও ৪০ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি ও জরিমানা প্রদান করা হয়েছে।
বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটি অভিযুক্তদের শোকজের জবাব যাচাই শেষে এই শাস্তি প্রদান করে। বিশ্ববিদ্যালয় রেজিষ্ট্রার আনিছুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
শাস্তিপ্রাপ্তরা হচ্ছেন আজীবন বহিষ্কার ছাত্রলীগ কুয়েট শাখার সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজান, হাসান আব্দুল কাইয়ুম, মোহাম্মদ কামরুজ্জামান (রাজ্জাক) ও রিয়াজ খান নিলয়। দুই শিক্ষা বর্ষ ও আবাসিক হল থেকে বহিষ্কার হয়েছেন তাহমিদুল হক ইশরাক, মাহমুদুল হাসান, সাদমান সাকিব, মাহিন মুনতাসির, রাগিব আহসান মুন্না, জামিউর রহমান, রুদ্রনীল সিংহ শুভ।
এক শিক্ষা বর্ষ বহিষ্কার হয়েছেন আনিকুর রহমান। এছাড়া ২২ শিক্ষার্থীকে এক শিক্ষা বর্ষ বহিস্কার করা হয়েছে। তবে আপাতত তা স্থগিত থাকবে। ভবিষ্যতে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালীন কোন ধরনের অপরাধে জড়িত প্রমাণিত হলে এই শাস্তি বলবৎ হবে। আরও ১০ শিক্ষার্থীকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তারা হচ্ছেন আহসানুল আবেদীন, কবির হোসেন, শুভ মন্ডল, শাহরিয়ার আহমেদ মুশফিক, ফয়সাল কবির ফাহিম, শাফিন আহমেদ, আদনান ইসলাম, সাকিব সরদার, সানজিদুল ইসলাম ও সাদাফ হেলাল।
বিশ্ববিদ্যালয় রেজিষ্ট্রার আনিছুর রহমান বলেন, ঘটনার দিন ওই শিক্ষককে বাড়ি যাওয়ার পথে গতিরোধ ও তাকে তার কক্ষে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় শৃঙ্খলা ভঙ্গ হয়েছে। এছাড়া তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে সংশ্লিষ্ট আরও কিছু ঘটনায় শৃঙ্খলা কমিটি এই শাস্তি প্রদান করেন।
জানা যায়, গত ৩০ নভেম্বর দুপুর ৩টার দিকে কুয়েটের ইইই শাখার প্রফেসর ও লালন শাহ হলের প্রভোষ্ট ড. মো. সেলিম হোসেন হার্ট অ্যাটাকে মারা যান। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা আগে সেলিম হোসেন কুয়েট শাখা ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মীর মানসিক নিপিড়নের শিকার হয়েছিলেন। এতে অভিযুক্ত কুয়েট ছাত্রলীগ শাখার সাধারণ সম্পাদকসহ ৯ জনকে সাময়িক বহিস্কার করা হয়। লালন শাহ হলে ডিসেম্বর মাসে ডাইনিং ম্যানেজার নির্বাচন নিয়ে ড. সেলিম হোসেনকে চাপ দেয়া হচ্ছিল।
এদিকে ড. সেলিমের মৃত্যুর ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের দাবিসহ পাঁচ দফা দাবিতে ২ ডিসেম্বর থেকে একাডেমিক কার্যক্রম বর্জন করে শিক্ষক সমিতি। পরে ঘটনার তদন্তে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি তাদের তদন্ত প্রতিবেদনে শিক্ষকের মৃত্যু ঘটনায় ৪৪ জন শিক্ষার্থীর সম্পৃক্ততা খুঁজে পায়। পরে ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটি তাদেরকে শোকজ করে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল