রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আবাসিক হলে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে শাখা ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় লাঠিসোঁটা নিয়েও উভয়পক্ষের কিছু নেতাকর্মীকে অবস্থান নিতে দেখা যায়। সোমবার মধ্যরাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব আব্দুল লতিফ হলে এ ঘটনা ঘটে।
এ ব্যাপারে হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, হলে সিট নিয়ে কিছু শিক্ষার্থীর মধ্যে একটা সমস্যা হয়েছিল বলে জেনেছি। তবে কোন কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু কয়েক দিন আগে তাফকিফ আল তৌহিদকে নবাব আবদুল লতিফ হলের দায়িত্ব দেন। তিনি ওই হল শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের (২০১৫-১৬) শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। সোমবার রাত আটটার দিকে তৌহিদ এক জুনিয়র কর্মীকে হলে আসন দেওয়ার জন্য নাট্যকলা বিভাগের ২০১৫-১৬ সেশনের শিক্ষার্থী বিবেক সাহাকে হলের ৩২২ নম্বর কক্ষ থেকে থেকে নামিয়ে দেন। এ সময় বিবেক সাহাকে কক্ষ থেকে বের করতে বাধা দেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামীম হোসেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি শাহিনুল ইসলাম সরকারের অনুসারী।
বিষয়টি নিয়ে তাফকিফ আল তৌহিদ ও শামীমের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। এ সময় শামীম ও তার নেতা-কর্মীরা হলে দেশি অস্ত্র নিয়ে অবস্থান নেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের শতাধিক অনুসারী হলের সামনে জড়ো হয়ে মহড়া দেন। এ সময় তাদের হাতে বাঁশে লাঠি ও পাইপ দেখা যায়। একপর্যায়ে শামীমের অনুসারীরা হলের ভেতরে অবস্থান নেন এবং সভাপতি-সম্পাদকের অনুসারীরা হলের বাইরে অবস্থান নেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, নবাব আব্দুল লতিফ হলের মূল ফটকে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদকের অনুসারীরা এবং হলের ভিতরে মহানগর ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি হাসনাইন মুত্ত্বাকি বিষ্ময়, সহ-সভাপতি অনিক মাহমুদ বনি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৌরভ শেখসহ শামীমের অনুসারীরা অবস্থান করছেন। উত্তেজনার সময় রাবি ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু ও সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিব হলে রাত ১২ টার দিকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। দেড় ঘণ্টা আলোচনা শেষে প্রায় রাত দেড়টার দিকে তারা হল থেকে বেরিয়ে যান। এসময় তারা সকলকে শান্ত থাকতে বলেন।
হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি শামীম হোসেনের সমর্থনে বহিরাগত ছাত্রলীগ নেতা হওয়া সত্ত্বেও তারা হলে এসেছিলেন কিনা জানতে চাইলে হাসনাইন মুত্ত্বাকি বিষ্ময় বলেন, আমরা শুনেছিলাম বিনোদপুরে শিবির ককটেল ফাটিয়েছে। তাই ওদিকে গেছিলাম। বিশ্ববিদ্যালয়েও তখন একটা ইস্যু হয়েছে বলে জানতে পারি, তাই সেখানে যাই। পরে চলে এসেছি। আমাদের কেউ ডাকেনি।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু বলেন, হলে সিট নিয়ে ছোট একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। আমি আর সেক্রেটারি গিয়ে সমাধান করে দিয়েছি। আর কোন সমস্যা নাই।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল