রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাপক সনৎকুমার সাহা বলেছেন, কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক ছিলেন অসাম্প্রদায়িক চেতনা এক বিমূর্ত প্রতীক। তিনি শোষিতদের কাছে ছিলেন সংগ্রামী চেতনা।
বুধবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হকের দ্বিতীয় প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠিত স্মরণসভায় এসব কথা বলেন তিনি। দর্শন বিভাগ এ সভার আয়োজনে করে।
অধ্যাপক সাহা বলেন, হাসান আজিজুল হক ছিলেন বাংলা সাহিত্যের প্রেরণা। আগুন পাখি ছিল তার শ্রেষ্ঠ কৃতিত্ব। বাচিক শিল্পী হিসেবে বাংলা সাহিত্যে তিনি এক অনন্য ব্যক্তিত্ব। শুধু সাহিত্যে নয়, একজন প্রগতিশীল, অসাম্প্রদায়িক ও সমাজ সংস্কারক হিসেবে তিনি ছিলেন অনুকরণীয়। তার আদর্শ আমাদের অনুপ্রাণিত করবে।
সভায় দর্শন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক নিলুফার আহমেদের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার, বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম ও অবায়দুর রহমান প্রামাণিক, আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাপক সনৎকুমার সাহা এবং মুখ্য আলোচক ছিলেন বাংলা বিভাগের সাবেক অধ্যাপক চৌধুরী জুলফিকার মতিন।
মুখ্য আলোচকের বক্তব্যে কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হকের জীবনদর্শনের ওপর স্মৃতিচারণ করেন চৌধুরী জুলফিকার মতিন। এ সময় তিনি কথাসাহিত্যিকের সাহিত্য, সংগ্রাম ও সমাজ চেতনার দিক তুলে ধরেন।
উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, হাসান আজিজুল হক ছিলেন সমাজ ও রাজনীতি সচেতন ব্যক্তিত্ব। তিনি মানুষের অধিকারের কথা বলতেন এবং শোষিতদের পক্ষে ছিল তার শক্ত অবস্থান। এ বিষয়ে তিনি কখনো কুণ্ঠিত হননি। প্রায় সারাটি জীবনই তিনি অসাম্প্রদায়িক চেতনার জয়গান করেছেন এবং লেখনির মাধ্যমে তা প্রচার করেছেন। সাংস্কৃতিক অঙ্গণেও ছিল তার নানা অবদান। তিনি আমাদের জাতীয় শিক্ষক সমতুল্য। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন একজন মানুষ পাওয়া গর্বের। মহান এ মানুষের চেতনা ও আদর্শকে লালন করার আহ্বান জানান তিনি।
দর্শন বিভাগের শিক্ষক তাসনিম নাজিরা রিদার সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য দেন দর্শন বিভাগের সাবেক অধ্যাপক মহেন্দ্রনাথ অধিকারী, অধ্যাপক শামীমা আক্তার, অধ্যাপক আলতাফ হোসেন (২) এবং কথাসাহিত্যিকের ছেলের স্ত্রী ও বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. সুলতানা রাজিয়া মালা প্রমুখ।
এ সময় হাসান আজিজুল হকের ছেলে বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ইমতিয়াজ হাসানসহ দর্শন এবং অন্যান্য বিভাগের শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, মমতাজ উদ্দিন কলাভবন থেকে শোকযাত্রা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে অবস্থিত কথাসাহিত্যিকের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এতে অংশ নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম, প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক ও দর্শন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীবৃন্দ।
প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক জোটসহ বিভিন্ন বিভাগ ও সংগঠন কথাসাহিত্যিকের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন।
বিডি প্রতিদিন/এমআই