‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে, প্রতিবছর অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স (এএমআর) এর কারণে সকল দেশের ধনি, গরীব, নারী, পুরুষ, শিশু, বৃদ্ধ মিলে প্রায় ৭ লক্ষ মানুষ মারা যাচ্ছে। অথচ আমাদের হাতে অ্যান্টিবায়োটিক আছে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই তা কাজ করছে না কেবল রেজিস্ট্যান্সের কারণে। অনেক রোগী, বিশেষত আইসিইউ রোগীদের অনেকেই মারা যাচ্ছেন অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্সের কারণে। তাই বিশেষজ্ঞদের ধারনা, ২০৫০ সাল নাগাদ এএমআর এর কারণে পৃথিবী ব্যাপী প্রতিবছর অতিরিক্ত ১০ লক্ষ ১৭ হাজার ৬ শত কোটি টাকা স্বাস্থ্য খাতে খরচ হবে।
সোমবার সকালে চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ (সিআইএমসিএইচ) ও চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল ডেন্টাল কলেজের (সিআইডিসিএইচ) যৌথ উদ্যেগে এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স সচেতনতা সপ্তাহ উপলক্ষ্যে আয়োজিত বৈজ্ঞানিক সেমিনারে মূল প্রবন্ধে এসব কথা বলা হয়।
কলেজ অডিটোরিয়ামে আয়োজিত সেমনিারে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম ইন্টান্যাশনাল ডেন্টাল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ মুসলিম উদ্দিন। কী-নোট স্পিকার প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ফার্মাকোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. ফাতিহা তাসমিন জিনিয়া। সেমিনারে কো-চেয়ার ছিলেন ফার্মাকোলজি বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা. এজেডএম আশেক-ই-ইলাহি। বিশেষজ্ঞ প্যানেলে উপস্থিত ছিলেন সার্জারি বিভাগের বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোখলেসুর রহমান, চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল ডেন্টাল কলেজের উপাধ্যক্ষ ডা. মো. আলী হোসাইন। এবারের বিশ্ব অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স সচেতনতা সপ্তাহের শ্লোগান ‘হোক সচেনতার বিস্তার, চাই অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স থেকে নিস্তার’। সেমিনারে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স এর প্রভাব ও সচেতনতা নিয়ে হাসপাতালে প্রাপ্ত কেইসগুলোর আলোকে ছবিভিত্তিক প্রেজেন্টেশন প্রদান করেন চর্মরোগ বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা. শামিম আরা। এএম আর নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে হাসপাতালের বহির্বিভাগে বাংলা লিখা বিভিন্ন পোস্টার প্রদর্শন করা হয়।
মূল প্রবন্ধে বলা হয়, আমি, আপনি বা আমাদের পরিবারের যে কেউ এএমআর এর ভয়াবহ পরিণতির শিকার হতে পারি। আমরা হয়তো একটা প্রজন্ম রেখে যাচ্ছি, যারা ছোট ইনফেকশনের জন্যও কোনো কার্যকরি অ্যান্টিবায়োটিক পাবে না। সুতরাং এএমআর এর ভয়াবহতা সম্পর্কে সবার সঙ্গে আলোচনা করুন, সচেতনতা গড়ে তুলুন। সামান্য জ্বর, সর্দি, কাশি বা ভাইরাল ইনফেকশনের জন্য অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। অ্যান্টিবায়োটিক ক্রয় বা খাওয়ার পূর্বে বারবার চিন্তা করুন। ফার্মেসি থেকে কিনে অ্যান্টিবায়োটিক খাবেন না। শুধুমাত্র রেজিস্টার্ড ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাবেন। অবশ্যই সময় মতো ও পরিপূর্ণভাবে অ্যান্টিবায়োটিকের কোর্স শেষ করবেন। আ্যান্টিমাইক্রোবিয়ালের সঠিক ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়িয়ে আপনিও হয়ে উঠুন একজন এএমআর যোদ্ধা।
বিডি প্রতিদিন/এএম