সরকারি কলেজগুলোতে বিজ্ঞান শিক্ষার সুযোগ সম্প্রসারণ প্রকল্পের (ফোসেপ) কার্যক্রম শুরু হয় ২০১৮ সালের ১ জুলাই। প্রায় সাত বছর হতে চললেও প্রকল্পে আশানুরূপ অগ্রগতি নেই। এ প্রকল্পের অধীনে একাডেমিক ভবন নির্মাণ করা হবে ১৭৬টি। এর মধ্যে জেলা পর্যায়ে ৮১টি ভবন ও উপজেলা পর্যায়ে ৯৫টি।
জানা গেছে, বর্তমানে জেলা পর্যায়ে ৭৫টি ভবনের কাজ চলমান রয়েছে। দুটি ভবনের কাজ এখনো শুরু করা যায়নি। আর উপজেলা পর্যায়ে ভবন নির্মাণ হয়েছে ৭৭টি। ভবন নির্মাণে আশানুরূপ অগ্রগতি না হলেও কেনাকাটা প্রায় শেষ করেছেন প্রকল্প-সংশ্লিষ্টরা। এর ফলে আগে কেনা অনেক ইলেকট্রনিক জিনিসপত্র ও আসবাবপত্র অব্যবহৃত অবস্থায় নষ্ট হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এ প্রকল্পে বাকি কেনাকাটা বন্ধের নির্দেশনা দিয়েছেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক। বিজ্ঞান শিক্ষার সুযোগ সম্প্রসারণের মাধ্যমে দক্ষ জনগোষ্ঠী গড়ে তোলার উদ্দেশে ২ হাজার ৫১১ কোটি টাকার প্রকল্পটির মেয়াদ নির্ধারিত ছিল আগামী জুন পর্যন্ত। গত ৩১ মার্চ পর্যন্ত প্রকল্পের আর্থিক অগ্রগতি ৬৬ দশমিক ৭২ শতাংশ। আর বাস্তব অগ্রগতি ৭০ শতাংশ। প্রকল্পের আশানুরূপ অগ্রগতি না হওয়ায় বেড়েছে প্রকল্পের মেয়াদ। এ প্রকল্পের আওতায় প্রতিটি কলেজের অধ্যক্ষের কার্যালয়ের জন্য ২০০টি ফটোকপিয়ার মেশিন, ২০০ কলেজের শিক্ষক মিলনায়তনের জন্য মাইক্রোওভেন, ফ্লাক্স ও ফ্রিজ সরবরাহ করা হয়েছে। ৮০ হাজার আসবাবপত্র সরবরাহ হয়েছে ৯১টি কলেজে, আর আইসিটি ল্যাবের জন্য এসি সরবরাহ করা হয়েছে ১৮২টি। এ ছাড়া ২০০ কলেজের মধ্যে ১১৯টি কলেজে ৭১৪ সেট ল্যাবরেটরি ইক্যুইপমেন্টও সরবরাহ শেষ করেছেন প্রকল্প-সংশ্লিষ্টরা। বিজ্ঞান শিক্ষা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ৯১ কলেজের জন্য কেনা শেষ হয়েছে ১০ হাজার ৫০২টি কম্পিউটার। ছাত্র হোস্টেলের জন্য কেনা হয়েছে টিভি, ডিপ ফ্রিজ ছাড়াও অন্যান্য আসবাবপত্র। প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, ‘লাভজনক’ হওয়ায় কেনাকাটাতে বেশি আগ্রহী ছিলেন সংশ্লিষ্টরা। ফলে ভবন নির্মাণে আশানুরূপ অগ্রগতি না থাকলেও কেনাকাটা শেষ করায় অনেক জিনিসপত্র অব্যবহৃত থাকছে। এগুলোর কার্যকারিতা নষ্ট হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। প্রকল্প দলিলের তথ্যমতে, আওতাভুক্ত কলেজগুলোতে আইসিটি, পরিবেশবিজ্ঞান, ফিশারিজ, ফুড প্রসেসিংসহ যুগের চাহিদা বিবেচনায় ১০টি নতুন বিভাগ খোলার কথা বলা হয়েছিল। ৭ হাজার ২৭৫ জন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার জন্য পদ সৃষ্টির কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু এসবের কোনোটির কোনো অগ্রগতি নেই। বিজ্ঞান শিক্ষার সুযোগ সম্প্রসারণ প্রকল্পের পরিচালক অধ্যাপক মো. মাহমুদ হোসেন প্রতিবেদককে জানান, আগামী বছর পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ নির্ধারিত রয়েছে। ভবন নির্মাণ শেষ হওয়ার আগে জিনিসপত্র কেনা প্রায় শেষ হওয়ার ব্যাপারে মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি কোনো উত্তর দেননি। কলেজের জন্য কেনা আসবাবপত্র নষ্ট হচ্ছে কি না এ ব্যাপারেও মন্তব্য করেননি তিনি।