একবিংশ শতাব্দিতে এসে 'থ্রিডি বা ত্রিমাত্রিক' সিনেমার সঙ্গে পরিচয় না ঘটা মানুষ এখন খুব বেশি মিলবে না। তাই বলে থ্রিডি হৃদপিণ্ড! সেটা আবার কী? শুনতে অদ্ভূত লাগলেও সম্প্রতি থ্রিডি হৃদপিণ্ডই প্রাণ রক্ষা করেছে ১৪ মাস বয়সী এক শিশুর।
রক্ত মাংসের নয়, ছাপা হওয়া হৃদপিণ্ড! আর এ ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্টাকিতে।
জানা যায়, কেন্টাকির ১৪ মাসের বাসিন্দা রোল্যান্ড লিয়ান কুং বাওয়ির জন্মের সময়ই হৃদপিণ্ডে কিছু ত্রুটি ছিল। তা বুঝতেও পেরেছিলেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু ত্রুটিগুলো ঠিক করতে দরকার ছিল জটিল অস্ত্রোপচার। কিন্তু ১৪ মাসের শিশুর হৃদপিণ্ড এতটাই ছোট যে তা ভাল করে দেখাটাই সমস্যা। অথচ তা খুঁটিয়ে না দেখা গেলে অস্ত্রোপচার প্রায় অসম্ভব।
কোসেইর চিলড্রেনস হাসপাতালে ভর্তি রোল্যান্ডের চিকিৎসক আর্ল অস্টিন তাই শেষে ইউনিভার্সিটি অব লুইভিলের শরণাপন্ন হলেন। তাদের প্রযুক্তি বিভাগেই ছিল ত্রিমাত্রিক ছাপার কল। অবশেষে সেটিই ব্যবহার করলেন অস্টিন। এ কাজে প্রথম দরকার ছিলো রোল্যান্ডের হৃদপিণ্ডের স্ক্যান করা ছবি। কম্পিউটারে রাখা সে ছবিকেই নকশা হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল। আর তা অনুসরণ করেই ত্রিমাত্রিক ছাপার কল কাজ শুরু করে। প্রথম স্তরের উপর আর একটি স্তর, তার উপর আর একটি স্তর, এ রকম করে চলতে থাকে ছাপার কাজ। প্রায় ২০ ঘণ্টা পর রোল্যান্ডের হৃদপিণ্ডের ত্রিমাত্রিক প্রতিকৃতি হাতে পান অস্টিন। যা কি না আকারে রোল্যান্ডের হৃদপিণ্ডের দেড় গুণ।
তিন খণ্ডে ভাঙা সেই হৃদপিণ্ড খুঁটিয়ে দেখে তখন ত্রুটিগুলি বুঝতে পেরেছিলেন চিকিৎসক। সে অনুযায়ী জটিল অস্ত্রোপচারের পরিকল্পনাও করেন। চলতি মাসের ১০ ফেব্রুয়ারি রোনাল্ডের অস্ত্রোপচার হয়। ভালোবাসা দিবস বা ১৪ ফেব্রুয়ারি ছাড়া পায় ছোট্ট রোল্যান্ড।
সফল অস্ত্রোপচারের পর এখন অনেকটাই সুস্থ রোল্যান্ড। ধীরে ধীরে স্বাভাবিক জীবনে সে ফিরেও যেতে পারবে বলে আশা তার চিকিৎসকের।