এক ধাঁধাঁময় মমি খুঁজে পাওয়া গেছে যার মস্তিষ্ক রয়েছে অটুট, অথচ হৃদয় নেই। তার ওপরে সেই নারী মমির শরীরের ওপর পাওয়া গেছে দুইটি কাঠের তক্তা, যা দিয়ে সম্ভবত কোনো উপাচার কারে তার ক্ষত পূরণের চেষ্টা করা হচ্ছিলো।
আজ থেকে প্রায় ১,৭০০ বছর আগে এই নারী জীবিত ছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ সময়ে মিশর ছিলো রোমান সাম্রাজ্যের অধীনে এবং সে সময়ে খ্রিস্টধর্ম ছড়িয়ে পড়ছিল। ৩০ থেকে ৫০ বছরের মাঝে ছিলো তার বয়স। এই নারীর নাম জানা সম্ভব হয়নি। অন্যান্য মিশরীয়দের মতো তারও দাঁতে অনেক সমস্যা ছিলো এবং অনেকগুলো দাঁত ছিলো না।
রোমান সাম্রাজ্যের অধীনে ধীরে ধীরে মমি করার প্রচলন কমে আসছিলো এবং মানুষ খ্রিস্টধর্মের রীতিনীতি মানা শুরু করছিলো। কিন্তু এই নারী এবং তার পরিবার তখনও ছিলো সনাতন মিশরীয় প্রথার অনুসারী। এ কারণে তাকে মমি করা হয়। মমি করার জন্য তার পেটের নাড়িভুঁড়ি, পাকস্থলী, যকৃৎ এমনকি হৃৎপিণ্ডও বের করে নেওয়া হয়। কিন্তু মস্তিষ্ক রেখে দেওয়া হয়। বিভিন্ন মশলা এবং শ্যাওলা দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয় তার মাথা ও পেট, এরপর সম্ভবত তাকে কাপড়ে পেঁচিয়ে কফিনে রাখা হয়। তার শরীর ফুটো করার পরে তা বন্ধ করে দেওয়া হয় লিনেন এবং রজন দিয়ে, তারপর একে সারিয়ে তোলার জন্য দুইটি কাঠের তক্তা রাখা হয় তার পেট এবং কাঁধের ওপর। শুধু সারিয়ে তোলাই নয়, বরং তার অপসারিত হৃৎপিণ্ডের অভাব পূরণ করার জন্যেও এগুলো রাখা হতে পারে। কারণ তাদের বিশ্বাস অনুযায়ী, মৃত্যুর পরে তাদের হৃদয় দাঁড়িপাল্লায় মেপে দেখা হবে সে পরকালে প্রবেশের যোগ্য কি না। এ কারণে মমি বিশারদেরা ভাবতেন মমি তৈরির সময়ে হৃৎপিণ্ড অপসারণ করা হয় না। কিন্তু এই হৃদয়হীন মমি এবং সাম্প্রতিক সময়ে পাওয়া আরও কিছু মমি দেখে এই তত্ব ভুল মনে হয়।
এই মমি এবং তার কফিন এখন রাখা আছে মন্ট্রিলের ম্যাকগিল ইউনিভার্সিটির রেডপাথ মিউজিয়ামে। এটা ১৯ শতকে লুক্সর থেকে কেনা হয়েছিলো।