চীনে সমকামী মানুষের হার ক্রমেই যেন বেড়ে চলেছে। বিষয়টি নিয়ে উদ্বিঘ্ন প্রশাসন। এটিকে তারা দেখছে এক ধরণের মানসিক রোগ হিসেবে। দেশটিতে তাই সমকামিতা সারাতে বর্বর পদ্ধতি ব্যবহারেও পিছুপা হচ্ছে না হাসপাতালগুলো। বৈদ্যুতিক শকসহ বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করা হচ্ছে, যা ভুক্তভোগীদের দেহে স্থায়ীভাবে ক্ষত সৃষ্টি করছে।
ডেইলিমেইলের মঙ্গলবারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের বিভিন্ন হাসপাতালে খুবই গোপনে সমকামীদের চিকিৎসা করা হয়। সম্প্রতি এক মানবাধিকারকর্মী চিকিৎসা ব্যবস্থার ভিডিও ধারণ করে তা ছড়িয়ে দেন।
তিয়ানজিন মেন্টাল হেল্থ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নেওয়া মানবাধিকারকর্মী জন শেন জানান, তাকে মাদক ও (বৈদ্যুতিক) শক থেরাপি দেওয়া হয়। থেরাপি দেওয়ার আগে এক মনোচিকিৎসক তাকে রড দেখিয়ে বলেন, 'এটা একটা ছোট বৈদ্যুতিক রড। যখন আপনি এর মাধ্যমে তাড়িত হবেন, তখন ধাক্কা খাবেন। এরপর আপনি নিজেই বুঝবেন আপনাকে এ তাড়ন এড়াতে হবে।'
তার ধারণ করা ভিডিওতে দেখা যায়, এক নার্স তার লিঙ্গের পাশে ওই রডটি স্থাপন করছেন। রোগী ভীত হলে শক দেওয়া বন্ধ করা হয়।
হুসান হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া অপর এক সমকামীও একই ধরনের অভিজ্ঞতার ভিডিও ধারণ করেছেন। তিনি জানান, বৈদ্যুতিক শকের আগে এক মনোচিকিৎসক তাকে ঠাণ্ডা পানিতে গোসল অথবা জগিং করার পরামর্শ দেন।
ওই ব্যক্তি জানান, এই চিকিৎসার জন্য তার কাছ থেকে ৮০০ মার্কিন ডলার নেওয়া হয়। তার মাথায় বৈদ্যুতিক রড স্থাপন করা হয়েছিল বলেও জানান তিনি।
স্থানীয় সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মীরা অভিযোগ করেছেন, পুলিশ এ ঘটনাগুলো গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে। যারা এই পদ্ধতির বিরোধিতা করে তাদের জেলে ঢুকানোর হুমকি দেওয়া হয়।
সমকামিতা দূরীকরণে এই পদ্ধতি ব্যবহারের ভয়বাহতা সম্পর্কে মনোচিকিৎসক জনি লি বলেন, 'এই পদ্ধতি দীর্ঘময়োদি ও স্থায়ী ক্ষতি সাধন করতে পারে। এমনকি সারাজীবনের জন্য কেউ অক্ষম হয়ে যেতে পারে।'
বিডি-প্রতিদিন/১০ নভেম্বর ২০১৫/ এস আহমেদ