নিজের ভাগ্য বদলাতে মানুষ কতকিছুই না করে। তবে কেউ এজন্য হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে, কেউ বুদ্ধি খাটিয়ে অল্প পরিশ্রমে কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে পৌঁছে যায়। কেউ আবার অন্যের মাথায় কাঁঠাল ভেঙে গড়ে তোলে স্বপ্ন বাস্তবায়নের সিঁড়ি। কেউ বা কাজ-কর্ম না করে ভাগ্যের ওপর সব ছেড়ে ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে থাকে। আর এ ধরণের মানুষের মধ্যে কাজ করে নানা বিশ্বাস ও কুসংস্কার। দেশ, জাতি, ধর্ম ভেদে মানুষের আচার আচরণ, খাদ্যাভাস, জীবনযাত্রার মান ভিন্ন হয়। কিন্তু কুসংস্কার সকল ভৌগলিক সীমায়ই বিচরণ করে। শুধু স্থান ভেদে ধরণ হয় ভিন্ন। বিশ্বে প্রচলিত এমন ১২টি কুসংস্কার দেখা যাক এক নজরে-
১) ঘরে চড়ুই পাখির বাসা- ঘরে চড়ুই পাখির বাসা বাধলে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার মানুষরা বিশ্বাস করে সেই ঘরে শ্রীবৃদ্ধি হয়। ভারতীয়দের বিশ্বাস ঘরে চড়ুই পাখির বাসা বাধলে ঘর নোংরা হলেও আসলে তা সংসারে কল্যানের পূর্ব লক্ষণ।
২) নম্বর সাত- সাত সংখ্যাটা ইউরোপের বিভিন্ন অংশে পয়া (শুভ) বলে মনে করা হয়। ঠিক যেমনটা অপয়া হিসেবে দেখা হয় ১৩ সংখ্যাকে। অর্থাৎ, আনলাকি থার্টিন। বিভিন্ন ক্যাসিনোর আসরে সাত সংখ্যাটা সবচেয়ে বেশি ধরা হয়। যদিও ভারতীয়রা সাত সংখ্যাটা এড়িয়ে চলেন। খ্রীস্টান চার্চে বলা হয় মানুষকে ভগবান সাতটা উপহার দিয়েছে-জ্ঞান, বোঝাপড়া, সম্মান, গৌরব, আশীর্বাদ, শক্তি আর ধার্মিকতা। তাই সাত মানেই শুভ। জাপানিরা বিশ্বাস করেন সাতটা ভগবান দুনিয়ায় আছে। সেই সাত ভগবান নতুন বছরে মানুষকে উপহার দেয়।
৩) তারাখসা- কুছ কুছ হোতা হ্যায়-এর তারাখসাকে নিয়ে দৃশ্যটা তো সবাই দেখেছেন। সেখানেই তো বলা আছে তারাখসার সময় চোখ বন্ধ করলে যা চাওয়া হয় সেটা নাকি পাওয়া যায়। তবে শুধু ভারতে নয় মার্কিন মুলুক, মেক্সিকোর মত বিদেশ বিভুঁইয়েও তারাখসা দেখলে শরীর স্বাস্থ্য ভাল থাকার চিহ্ন হিসেবে মনে করা হয়।
৪) হাতির পাল- হাতির পাল দেখলে আয়ু বাড়ে বলে আফ্রিকানদের বিশ্বাস।
৫) জোড়া সাপ- সাপের শঙ্খ লাগার সময় তার ওপর কাপড় দিলে সেই কাপড় ঘরে রেখে দিলে সংসারের মঙ্গল হয় বলে ভারতীয়দের বিশ্বাস।
৬) জোড়া ডলফিন- মার্কিনীরা মনে করেন জোড়া ডলফিন দেখে কোনও বড় কাজে গেলে তা সহজেই উদ্ধার হয়। যে কারণে ছুটির দিনে মার্কিন মুলুকে ডলফিন পার্কে ভিড় বেশ চোখে পড়ার মত হয়।
৭) খরগোশের পা- ইউরোপ, আফ্রিকা, চীন, উত্তর-দক্ষিণ আমেরিকা জুড়ে মানুষের বিশ্বাস খরগোশের পা দেখলে দিন শুভ যায়।
৮) রামধনু- ইউরোপের বেশ কিছু দেশের মানুষদের বিশ্বাস অনেকক্ষণ ধরে রামধনুর দিকে চেয়ে থাকলে হঠাত্ করে সোনা লাভ হয়।
৯) ব্যাঙ- প্রাচীন ইজিপ্টের মানুষদের বিশ্বাস ছিল সদ্যোজাত সন্তানকে রক্ষা করে ব্যাঙদের দেবতা। এশিয়ার বিভিন্ন দেশের মানুষের বিশ্বাস ব্যাঙ দেখলে সন্তান লাভ হয়। ব্যাঙের ডাক শুনলে বন্ধুত্ব বাড়ে, প্রেম বাড়ে।
১০) পাখির বিষ্ঠা- ফেং শুই মতে, পাখির বিষ্ঠা কারও গায়ে পড়লে তার সময় খুব ভাল আসতে শুরু করে। গাড়ির ওপর পাখির বিষ্ঠা পড়লে নাকি গাড়ির মালিকের অর্থপ্রাপ্তির যোগ হয়।
১১) কচ্ছপ- চাইনিজ সংস্কৃতিতে কচ্ছপকে খুবই শুভ বলে মনে করা হয়। অসুস্থ ব্যক্তিকে কচ্ছপ দেখালে নাকি তার রোগ সেরে যায়। দীর্ঘায়ু হতেও নাকি কচ্ছপ দর্শণ করা প্রয়োজন।
১২) ঘোড়ার খুড়ের নাল- অশুভ শক্তির বিনাশে, ঘর-পরিবারে বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে প্রাচীন কাল থেকেই ঘোড়ার নালের ব্যবহার প্রচলিত। জ্যোতিষশাস্ত্র অনুযায়ী, ঘোড়ার নাল ব্যবহার করে বহু ব্যক্তির ভাগ্য পরিবর্তন হয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/২২ ডিসেম্বর ২০১৫/ এস আহমেদ