৮৬ বছর বয়সে কিলিমাঞ্জারো শৃঙ্গজয়৷ অদম্য সাহস ও মনের জোরেই এই অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন রাশিয়ার অ্যাঞ্জেলা ভোরোবেভা৷ এভাবেই গিনিস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম তুলে ফেলেছেন রাশিয়ার এই প্রবীণা৷
কিলিমাঞ্জারোর শৃঙ্গে পৌঁছে অ্যাঞ্জেলা এতটাই অভিভূত যে, সহযাত্রীর হাত ধরে নেচেও নিয়েছেন খানিকটা৷ কীভাবে পারলেন এই কঠিন কাজটা? অ্যাঞ্জেলার কথায়, 'খুবই কঠিন কাজ ছিল৷ প্রথম দিন আমরা একটা জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলাম৷ দ্বিতীয় দিন যেন মনে হল কানের মধ্যে একটা অদ্ভুত আওয়াজ হচ্ছে৷ তার পরের দিন কথাই বলতে পারছিলাম না৷ কানে ব্যথা লাগছিল৷ প্রায় এক সন্তাহ ধরে আমাকে ফিসফিস করে কথা বলতে হয়েছে৷ কিছু খেতেও পারিনি৷ শুধু চা আর মধু খেয়ে থেকেছি৷ সকালে যখন যাত্রা শুরু করেছি তখন রোদ ঝলমল আকাশ, তার পরই হয়তো বৃষ্টি৷ ভিজে একসা হয়ে গেছে, কিন্তু হাল ছাড়িনি৷ আমি বিশ্বাস করি, কোনও জিনিস একবার শুরু করলে শেষ না হওয়া অবধি থামতে নেই৷'
জানালেন, বিয়ের পর বরের সঙ্গে ভালোই ঘুরেছেন, কিন্ত্ত স্বামীর মৃত্যুর পর ১৫ বছর ঘোরাঘুরি পুরো বন্ধ ছিল৷ তার পর মেয়ের সঙ্গে কখনও গিয়েছেন তিউনিসিয়া, কখনও আবার কেপ টাউনে গিয়ে 'টেবল মাউন্টেনে' উঠেছেন৷ মরিশাসে গিয়ে মেয়ের সঙ্গে এক সন্তাহ কাটিয়েছেন৷ তখন সমুদ্রের ৩৫ মিটার নীচে ডুব দিয়ে প্রবালের সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে ভোলেননি৷
সিডনিতে গিয়ে ১৫০০টি সিঁড়ি টপকে উঠেছেন সিডনি হারবার ব্রিজে৷ কখনও আবার মেয়ের হাত ধরে পৌঁছে গেছেন ফিজিতে৷ এক কথায় বয়সকে তোয়াক্কা না করে পৃথিবী চষে বেড়িয়েছেন এই প্রবীণা৷ ঘোরার নেশা এতটাই ছিল, দু'বছর ধরে টাকা জমাতেন তাঁরা৷ তার পর বেরিয়ে পড়তেন অভিযানে৷ তবে, কিলিমাঞ্জারো অভিযান, এই সবের থেকে অনেক কঠিন ছিল৷ অ্যাঞ্জেলার কথায়, 'লোকে যখন প্রশ্ন করে কীভাবে এতদূর উঠলাম, আমি তাঁদের বলি, এক বার যখন শুরু করেছি, আমার থামার উপায় ছিল না৷ আমি কোনও রেকর্ড ভাঙার কথা ভেবে আরোহণ শুরু করিনি৷ ইচ্ছের জোরেই এ কাজ করেছি৷'
৮৬ বছর বয়সি অ্যাঞ্জেলার মতে, মানুষের ইচ্ছেশক্তিই আসল৷ কারও যদি ইচ্ছেশক্তি ও লক্ষ্যে পৌঁছনোর জেদ থাকে, তবে লক্ষ্য পূরণে কিছুই বাধা হতে পারে না৷
বিডি-প্রতিদিন/০৪ জানুয়ারি ২০১৬/ এস আহমেদ