ফোনবুক, লোহার রড, বেসবল ব্যাট সবকিছুই মুহূর্তেই দুই হাতের জোরেই ভেঙে দিতে প্রস্তুত। অভাবনীয় এই শক্তি প্রদর্শনের মাধ্যমে বর্তমানে হারকিউলিস নামে পরিচিতি লাভ করা এই ব্যক্তির নাম মনোজ চোপড়া। তিনি ভারতের ছত্তীসগঢ়ের রায়পুরের বাসিন্দা।
মনোজ চোপড়া ১৯৭০ সালে জন্মগ্রহণ করেন। দেশব্যাপী এখন হারকিউলিস নামেই পরিচিত তিনি। তার অবশ্য আরও একটি নাম রয়েছে, ‘ছত্তীসগড় জায়ান্ট’।
শুধু ভারতেরই নয়, মনোজ এশিয়ার মধ্যেও সবচেয়ে শক্তিশালী পুরুষ। বিশ্বে শক্তিশালীর তালিকার ১৪ নম্বরে রয়েছেন তিনি। গিনেস বুকে নামও রয়েছে তার।
পেশায় একসময় ব্যবসায়ী ছিলেন মনোজ। কিন্তু বিপুল ক্ষতির মুখে পড়ে নতুন করে শুরু করেছেন জীবন। শক্তি প্রদর্শন করাই মনোজের পেশা এখন।
১৯৮৬ সালে মাত্র ১৬ বছর বয়সে তিনি রায়পুরের মেল বিউটি প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে প্রথম হন। মনোজের উচ্চতা ৬ ফুট ৫ ইঞ্চি, ওজন ১৫৫ কিলোগ্রাম। বেঙ্গালুরুর একটি ট্রাভেল এজেন্সির মালিক ছিলেন তিনি। ৬টা গাড়ি ছিল তার। হঠাৎই তার সব গাড়ি একসঙ্গে খারাপ হতে শুরু করে। এর প্রভাব পড়ে ব্যবসায়। এতটাই খারাপ প্রভাব পড়েছিল যে ব্যবসা একেবারেই ডুবে যায়। এতে প্রচণ্ড হতাশ হয়ে পড়েন মনোজ। সন্দেহবশত ব্যবসার এক প্রতিদ্বন্দ্বীকে মারধর করে জেলেও যান।
এর বছর খানেক পর ডব্লিউডব্লিউই ভারতে ট্যালেন্ট হান্ট করতে এসেছিল। সেই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে নজরে আসেন তিনি। ডব্লিউডব্লিউই-এর পক্ষ থেকে তাকে আমেরিকায় পাঠানো হয় কুস্তির কৌশল শেখার জন্য।
ডব্লিউডব্লিউই তাকে ১৮ মাস ধরে লস অ্যাঞ্জেলসে প্রশিক্ষণ দেয়। সেই সময়ে মনোজ কখনও গ্যাস স্টেশন, গাড়ি-টয়লেট পরিষ্কার করে উপার্জন করেছেন। কিন্তু এভাবে আর চালাতে পারছিলেন না তিনি। ফলে বাধ্য হয়েই ডব্লিউডব্লিউই-এর প্রশিক্ষণ মাঝরাস্তায় ফেলে রেখে ভারতে ফিরে আসেন। শুরু হয় নতুন জীবন।
বর্তমানে ভারতের সবচেয়ে শক্তিশালী ব্যক্তি মনোজ। এমন কিছু বোধহয় নেই যা তিনি ভাঙতে পারবেন না। তার সামনে যা দেবেন তাই মুহূর্তেই ভেঙে দেবেন তিনি।
ভারতে তিন হাজারের বেশি শো করেছেন তিনি। এর বাইরে শো-এর সুবাদে কানাডা, আমেরিকাতে প্রায়ই উড়ে যেতে হয় তাকে।
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম