আমির মোহাম্মদ স্টুডেন্ট ভিসায় আমিরাতে আসেন ১৯৯৭ সালের জুন মাসে। নিজের ভেতর লুকিয়ে থাকা সুপ্ত প্রতিভা সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে কাছের বন্ধুদের উৎসাহ-অনুপ্রেরণায় আমির পা রাখেন মডেলিং ও অভিনয় জগতে। ধীরে ধীরে বাড়ে কাজের পরিধি। নিজের জন্য জায়গা করে নেয় ফ্যাশন শো, মিউজিক ভিডিও ও নাট্য জগতে মতো অভিনয় শিল্পে। প্রবল ইচ্ছে শক্তি এক পর্যায়ে তাকে দাঁড় করায় অভিনয়ের মঞ্চে।
অভিনেতা ও মডেল হিসেবে তার যাত্রা শুরু হয় দুবাই মিডিয়া সিটির জিডি মার্কেটিং মডেল এজেন্সির হাত ধরে। ২০০৬ সালে জিডি মার্কেটিং মডেল এজেন্সির মডেল নির্বাচিত হয় আমির। এরপর কাজ করেন দুবাই মিডিয়া সিটির দিবা মডেল এজেন্সি ও আবুধাবির এইচ এম ই মডেল এজেন্সির একজন মডেল হিসেবে কাজ করেন স্থির চিত্র, লাইভ ইভেন্ট ও ফ্যাশন শোতে।
২০০৮ সালে দৈনিক পূর্বকোণ পত্রিকার ঈদ ফ্যাশনের মডেল ও বিটিভিতে ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলদেশেও অভিনয়ের দ্বার খুলে তার। কাজের ধারাবাহিকতায় ২০০৯ সালে নুর হোসেন নুরুর পরিচালনায় চট্টগ্রামের সংগীত শিল্পী শেফালী ঘোষের গানের একটা মিউজিক ভিডিওতে অভিনয় করে আমির। পরের বছর ২০১০ সালে ইকবাল মাহমাুদের সাথে ফ্যাশন শো'র মডেল হিসেবে ফটো শূটিং করেন।
২০১১ সালে তিনি 'চান্দু মিয়া' ও 'হয় মামলা নয় খালাস' নামে দুটি বাংলা নাটকে অভিনয় করেন। জামাল মল্লিকের নাটক দুটিতে তার সহযোগী অভিনেতা-অভিনেত্রীদের মধ্যে চঞ্চল চৌধুরী, হাসান মাসুদ, ডা.এনামুল হক, হুমায়রা হিমু, তানি ও মীম অভিনয় করেন। এরপর সংগীত শিল্পী তানজীব সরোয়ার এর 'আমায় ডেকে নাও' গানের মডেল হিসেবে মিউজিক ভিডিওতে অভিনয় করেন ২০১২ সালে। একই সময় তিনি কাজ করেন মডেল রং ফ্যাশন ও ফটো ফোর লাইফ মডেল এজেন্সিতে।
অভিনয় শিল্পের সাথে সম্পর্ক রেখে আমিরাতে মিডিয়া দপ্তরের অনুমোদন নিয়ে নতুন একটি মিডিয়া এজেন্সি প্রতিষ্ঠা করার স্বপ্ন দেখছেন আমির। যে এজেন্সির মাধ্যমে দেশ থেকে টিম নিয়ে এসে আমিরাতে তৈরি করা যাবে বিভিন্ন অনুষ্ঠান। এছাড়াও আমিরাতে বাস্তব ঘটনাগুলো অবলম্বনে তৈরি করতে চান কিছু শর্টফিল্ম। সেই সাথে মনে লালন করছেন টেলিফিল্ম তৈরি ও ভাল মানের মিউজিক ভিডিও করার কথা।
আমির মোহাম্মদ জানালেন, 'ইউএইতে আমার মূল টার্গেট হচ্ছে, মিডিয়ায় কাজের মাধ্যমে বাংলদেশিদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করা এবং আমি সে পথে এগিয়ে যাচ্ছি। প্রবাসী বাংলাদেশি হিসেবে আমরা সব করতে পারি। লেবার থেকে শুরু করে উচ্চ পর্যায়ে আমাদের সুনাম আছে বিশ্বজুড়ে। অতএব, আমদের এমন কিছু করা উচিত নয়, যাতে ভিন্ন দেশিরা আমাদের ছোট করে দেখে। প্রয়োজনে যে যার জায়গা থেকে সাধ্যমতো ভাল কাজ করার এবং তা সবার কাছে তুলে ধরার। আর তাই প্রবাসে সবাইকে নিয়ে কাজ করতে চাই। থাকতে চাই অসুস্থ-অসহায়দের প্রবাসীদের পাশে, পাশাপাশি বিপথগামী প্রবাসীদের সঠিক পথ দেখানো চেষ্টা করবো।'
উল্লেখ্য, চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার পূর্ব শিকার পুর গ্রামের আমির মোহাম্মদের মা হালিমা বেগম ও বাবা ইমদাদুল হক। অভিনয়ের পাশাপাশি আমির আবুধাবিতে হিলিওপোলিস ইলেকট্রিক কোম্পানির অফিস এডমিনিস্ট্রেটর হিসেবে কর্মরত আছেন।
বিডি-প্রতিদিন/ ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫/ রশিদা