নোবেল লরিয়েট প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, তিনটি শুণ্যের সমন্বয়ে গড়ে তোলা সম্ভব নতুন বিশ্ব। এগুলো হলো শুণ্য দারিদ্র, শুণ্য বেকারত্ব ও শুণ্য কার্বণ নিঃস্বরণ। আর তরুণ প্রজন্মের পক্ষেই সম্ভব তিন শুণ্যের সমন্বয়ে নতুন বিশ্ব গড়ে তোলা। কারণ, মানব জাতির ইতিহাসে তাদের প্রজন্মই সবচেয়ে শক্তিশালী। সব ধরনের ক্ষমতা ও সৃষ্টিশীলতা তাদের মধ্যে রয়েছে।
গত বুধবার রাতে ব্যাংককে 'ওয়ান ইয়ং ওয়ার্ল্ড সামিট ২০১৫' উদ্বোধনকালে পৃথিবীর ১৯৬টি দেশ থেকে আগত ১৩০০ তরুণ নেতার উদ্দেশ্যে তিনি এসব কথা বলেন। ড. ইউনূস মঞ্চে উঠলে উপস্থিত ১৩০০ নবীন নেতা উঠে দাঁড়িয়ে করতালির মাধ্যমে তাঁকে অভিনন্দন জানান।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অপর দু'জন মূখ্য বক্তা ছিলেন জাতি সংঘের ৭ম মহাসচিব কফি আনান এবং রক ষ্টার থেকে দারিদ্র বিমোচন কর্মী হওয়া স্যার বব গেলডফ। মঞ্চে প্রফেসর ইউনূস, কফি আনান ও গেলডফের সাথে যোগ দেন পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে আগত নবীন প্রতিনিধিদের কাউন্সেলরগণ, যাঁদের মধ্যে ছিলেন হলিউডের অবতার-খ্যাত প্রযোজক জন ল্যানডো ও বিশ্বখ্যাত ক্রিকেটার ষ্টিভ ওয়াহ।
পৃথিবীর ১৯৬টি দেশ থেকে ১৩০০ নবীন নেতার অংশগ্রহণে এ সামিট পরিবেশ, নারীর ক্ষমতায়ণ, শিক্ষা, যুব বেকারত্ব ও বৈশ্বিক ব্যবসায়ের ভূমিকার মতো বিভিন্ন সামাজিক ইস্যুর উপর বিশেষভাবে জোর দিচ্ছে।
প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে এই সম্মেলনে বাংলাদেশ থেকে ১০ সদস্যর একটি প্রতিনিধিদলও যোগ দেন যাদের ৯ জনই নারী। ওয়ান ইয়ং ওয়ার্ল্ড এ নিয়ে তৃতীয় বছরের মতো প্রফেসর ইউনূসের সঙ্গে সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য বাংলাদেশের ১০ সদস্যের প্রতিনিধিদলকে স্পন্সর করছে। ইউনূস সেন্টার কয়েক মাস ব্যাপী একটি প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচনী প্রক্রিয়ার মধ্যমে এই প্রতিনিধিদের বাছাই করে। এরা যুব উন্নয়ন, জলবায়ু পরিবর্তন, মানবাধিকারসহ বিভিন্ন বিষয়ে কাজ করছে।
সম্মেলনে আরও থাকছে থাই সামাজিক উদ্যোক্তাদের ৪টি টীম কর্তৃক তাদের সামাজিক ব্যবসা পরিকল্পনা উপস্থাপন। এরা সকলেই থাই সামাজিক উদ্যোগ অফিস আয়োজিত থাই ইয়ং লীডার প্রোগ্রামের ফাইনালিষ্ট। এই কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত থাইল্যান্ডের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা ১০০টি সামাজিক ব্যবসা পরিকল্পনা। প্রফেসর ইউনূস ও তাঁর টীমকে এই সামাজিক ব্যবসা প্রতিযোগিতার বিচারকের দায়িত্ব পালন করার ও বিজয়ী বাছাই করার জন্যও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। টীমে আরও রয়েছেন ইউনূস সেন্টারের নির্বাহী পরিচালক লামিয়া মোর্শেদ। বিজয়ী প্রতিযোগীকে সামাজিক ব্যবসা শুরু করার জন্য ২ মিলিয়ন বাথ পুরষ্কার প্রদান করা হবে।
ওয়ান ইয়ং ওয়ার্ল্ড সামিট ডেভিড জোনস ও কেট রবার্টসন কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। ২০০৯ সালে প্রতিষ্ঠিত যুক্তরাজ্যভিত্তিক এই প্রতিষ্ঠানটির লক্ষ্য বিশ্বব্যাপী প্রতিভাবান তরুণ-তরুণীদের সমবেত করা এবং সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনয়নের উদ্দেশ্যে স্থায়ী সংযোগ তৈরির জন্য তাদের ক্ষমতায়ন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীদের স্বাগত জানান এ বছরের ওয়ান ইয়ং ওয়ার্ল্ড সামিটের আয়োজক ব্যাংককের গভর্ণর এবং ব্যাংকক মেট্রোপলিটান প্রশাসন।
বিডি-প্রতিদিন/১৯ নভেম্বর ২০১৫/ এস আহমেদ