উত্তর আমেরিকা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের উদ্যোগে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে এবারও আয়োজিত হয়েছে নানান বিশেষ অনুষ্ঠানমালা। গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করা হয় একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ ও চুড়ান্ত বিজয়ের প্রাক্কালে স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকার-আল্ বদর ও চিহ্নিত ঘাতকদের বর্বরতার কথা। যখন তারা হত্যা করে বাংলাদেশের লেখক কবি সংগীতজ্ঞ চলচিত্রকার সাংবাদিক শিক্ষক, দার্শনিকসহ অসংখ বুদ্ধিজীবীদের। আমি প্রথম যখন এ কবিতা পড়েছিলাম তখনও আজকের মতোই মনে হয়েছে আমি যেন ওই চরিত্র। এই হত্যাকারীদের অন্যতম হোতা আশ্রাফুজ্জামান রাজাকারের নিউইয়র্কে অবস্থান নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করে তাকে ধরে তার বিরুদ্ধে প্রদত্ত মৃত্যুদণ্ড বাস্তবায়িত করার দাবি জানানো হয়।
এবারের বুদ্ধিজীবী দিবস পালন অনুষ্ঠান অন্য বছরের তুলনায় অনেক ব্যতিক্রমী আমেজে অনুষ্ঠিত হয়। বুদ্ধিজীবী হত্যার শীর্ষ ঘাতকদের ফাঁসিতে ঝুলানোর ফলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত প্রবাসীরাও মধ্যরাতের এ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে একাত্তরের সকল ঘাতককে ফাঁসিতে ঝুলানোর দাবি উচ্চারণ করেন। এ প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত সকলে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অবিচল আস্থাশীল থাকার অঙ্গীকারও করেন।
অনুষ্ঠানের প্রস্তাবনা পাঠ করতে গিয়ে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, উত্তর আমেরিকার সভাপতি মিথুন আহমেদ বলেন, বুদ্ধিজীবী হত্যার বিচার দাবিতে এতকাল দেশে-প্রবাসে যে ধারাবাহিক আন্দোলন চলছে এ বছরটাকে আমরা তার প্রথম বিজয়ের বছর বলে মনে করি। কারণ এবারই প্রথম এই ব্যাপারে অভিযুক্ত একজন অপরাধীর চুড়ান্ত রায় কার্যকরী হয়েছে।
বাংলাদেশের এক সময়ের জনপ্রিয় টিভি অভিনেত্রী, বর্তমানে নিউইযর্ক প্রবাসী লুৎফুন নাহার লতার পরিচালনায় এ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল শামীম আহসান, একুশে পদকপ্রাপ্ত বিশিষ্ট অভিনেতা জামাল উদ্দিন হোসেন এবং শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সস্তান ড. জিয়াউদ্দিন আহমেদ। অংশগ্রহণকারী নেতৃবৃন্দের মধ্যে আরও ছিলেন ড. সিদ্দিকুর রহমান, শিতাংশু গুহ, আকবর হায়দার কিরণ প্রমুখ।
শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে ‘জেগে আছো’ শিল্পকর্মে অংশগ্রহণ করেন প্রবাসের বিশিষ্ট শিল্পী স্বপ্না কাউসার, জীবন বিশ্বাস, জি এইচ আরজু, আবীর আলমগীর, সাবিনা হাই উরবী, তৈয়বুর রহমান টনি, সেমন্তী ওয়াহেদ, গোপন সাহা, মিজানুর রহমান বিপ্লব, সাদেক শিবলী ও শুক্লা চুমকি। রাত বারোটা বাজতেই মোমবাতি হাতে নিয়ে দেশাত্মবোধক গান গাইতে গাইতে পুরো জাকসন হাইটস এলাকা প্রদক্ষিণ করেন শত শত বাংলাদেশি।
প্রসঙ্গত, বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে এবারও ১২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশি-আমেরিকান শিল্পীদের ছবি আঁকার অনুষ্ঠান। পরপর দুই বার উডসাইডের সাউথ এশিয়ান মিউজিক সোসাইটিতে হলেও এবার ছবি আঁকার আসর বসে হাটবাজার পার্টি মিলনায়তনে।
বিডি-প্রতিদিন/ ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৫/ রশিদা