যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণকারী বাংলাদেশি প্রজন্মকে বাঙালি সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত রাখতে দীর্ঘ দু’যুগেরও অধিক সময় ধরে কর্মরত নিউইয়র্কভিত্তিক ‘বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পারফর্মিং আর্টস’ তথা বিপার বার্ষিক সনদ বিতরণ ও বিজয় দিবসের ব্যতিক্রমধর্মী-বর্ণাঢ্য এক অনুষ্ঠান হলো গত শনিবার। নির্ধারিত সময় ঠিক সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় এস্টোরিয়াস্থ পাবলিক স্কুল-২৩৪ এর মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে শতাধিক তরুণ-তরুণীর বিভিন্ন পরিবেশনায় অভিভাবকসহ ভিনদেশীরা মুগ্ধ হয়েছেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ এবং বাঙালির ঐতিহ্য ধ্বনিত হয় মার্কিন মুল্লুকে বড় হওয়া প্রজন্মে। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি জাগানিয়া ঘটনাবলী গল্পের মধ্য দিয়ে ছোট্টমণিদের সামনে অত্যন্ত হৃদয়গ্রাহিভাবে উপস্থাপন করেন প্রবাসের সাংবাদিক-লেখক-কলামিস্ট হাসান ফেরদৌস।
দুই পর্বের সামগ্রিক এই অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে ছিল “ট্রফি ও সনদ বিতরণ”। বিপার বিভিন্ন কোর্স সাফল্যজনকভাবে সম্পন্ন করার পর সংশ্লিষ্টদের মাঝে এসব সনদ এবং ট্রফি বিতরণ করেন সাংবাদিক-কলামিস্ট হাসান ফেরদৌস। এ সময় হাসান ফেরদৌস তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেন,‘সন্তানদের বাংলা সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত করাতে এগিয়ে আসতে হবে অভিভাবকদের।’
দ্বিতীয় পর্বে ছিল বিপা পরিবারের অংশগ্রহণে বিজয় দিবসের জন্য নিবেদিত সাংস্কৃতিক পর্ব। এই পর্বে প্রথমে পরিবেশিত হয় নিলোফার জাহানের পরিকল্পনা, গ্রন্থনা ও পরিচালনায় ছোটদের গীতিআলেখ্য ‘বাংলাদেশে বাড়ি আমার’। এতে কবিতা ও গানের সঙ্গে বাংলাদেশের ইতিহাস অত্যন্ত সুন্দরভাবে তুলে ধরে ছোট ছোট শিশুরা। তবলার শিক্ষক পিনাক পাণি গোস্বামীর পরিচালনায় ছাত্ররা চমৎকারভাবে পরিবেশন করে ‘তবলা লহড়া’। বিপার কর্মকর্তা এ্যানি ফেরদৌসের অনবদ্য কোরিয়াগ্রাফি ও নির্দেশনায় অত্যন্ত হৃদয়গ্রাহী একটি গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করে বিপা’র প্রারম্ভিক ও অন্যান্য বিভাগের ছাত্রছাত্রীরা।
এরপরে পরিবেশিত হয় বিপা’র বড়দের সঙ্গীতানুষ্ঠান ‘ও আমার দেশের মাটি’। বিপার প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম সেলিমা আশরাফের পরিকল্পনা ও পরিচালনায় এই পর্বে দেশপ্রেমের গান ও কবিতা পরিবেশিত হয়। মিলনায়তনের দর্শকরা একাত্ম হয়ে এসব গানের সঙ্গে গলা মেলাচ্ছিলেন। সবশেষ অনুষ্ঠানটি ছিল এ্যানি ফেরদৌসের পরিকল্পনা, কোরিওগ্রাফি ও পরিচালনায় নৃত্যানুষ্ঠান ‘বিজয়ের টানে’। বিজয়ের গান ও কবিতার ওপর পরিবেশিত এই অনুষ্ঠানটি দর্শকদের আবেগ আপ্লুত করে। বিপার সভাপতি নিলোফার জাহানের সমাপনী বক্তব্যের পরে বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে ছিমছাম এ অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।
বিডি-প্রতিদিন/ ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৫/ রশিদা