বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকার অনলাইন পোর্টালে খবর প্রকাশের পর হতভাগ্য দুবাই প্রবাসী তাবিদুরের ঠিকানা পাওয়া যায়। অবশেষে আজ শনিবার তিনি দেশে ফিরলেন। আরব আমিরাতের স্থানীয় সময় ভোর সাড়ে পাঁচটায় বাংলাদেশ বিমানে দুবাই টু সিলেটের একটি ফ্লাইটে দেশের উদ্দেশে দুবাই ত্যাগ করেন। বাংলাদেশ কনস্যুলেটের আন্তরিক সহযোগিতায় ও জোর প্রচেষ্টায় দীর্ঘ দশমাস ধরে হাসপাতালের বিছানায় পড়ে থাকা মোহাম্মদ তাবিদুর রহমানকে দেশে পাঠানো সম্ভব হলো।
বাংলাদেশ কনস্যুলেট দুবাইয়ের প্রথম সচিব (শ্রম) একেএম মিজানুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, ‘তাবিদুরের নাম-পরিচয় পাওয়ার পর আমরা তার মেডিকেল রিপোর্ট সংগ্রহ করে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করি। মন্ত্রণালয়ে তাবিদুরের পরিবার তার সুচিকিৎসার জন্যে তাকে দেশে প্রেরণের আবেদন করেন। যার প্রেক্ষিতে কনস্যুলেট তার ফিটনেস বুকিংএর জন্যে হাসপাতাল থেকে ফিরতি আরেকটি মেডিকেল রিপোর্ট সংগ্রহ করে। এরপর কমিউনিটি থেকে বিভিন্ন ভাবে অর্থ সংগ্রহের পর প্রায় একুশ হাজার পঞ্চশ দিরহাম ( বাংলাদেশের টাকায় প্রায় ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা) ব্যয় করে শনিবার ভোরে তাবিদুরকে দেশে পাঠানো সম্ভব হয়। দেখাশুনার জন্যে বিমানে তার সঙ্গে একজন নার্সও প্রেরণ করা হয়েছে।’
মিজানুর রহমান আরো বলেন, ‘তাবিদুরকে দেশে পাঠাতে সবচেয়ে জটিল কাজটি ছিল তার ভিসা ক্যানসেল করা। কারণ, সে যে কোম্পানিতে কাজ করতো সেখানে তার ভিসার মেয়াদ বহাল ছিল, কিন্তু তার পাসপোর্ট পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে, ওই কোম্পানি তাদের সবকিছু গুটিয়ে নিয়ে দেশে ফিরে যাওয়ায় কোম্পানির মালিকপক্ষকেও পাওয়া যায়নি। যার ফলে তার লেবার ভিসা ক্যানসেল করতে বিভিন্ন জটিলতাসহ প্রায় সাতদিন সময় লেগে গেছে।’
প্রসঙ্গত, গতবছর ৪ সেপ্টেম্বর ‘কে এই হতভাগ্য দুবাই প্রবাসী?’ শিরোনামে বাংলাদেশ প্রতিদিন-এর অনলাইনে একটি সংবাদ প্রকাশের পর পরিচয় মিলে হতভাগ্য প্রবাসী তাবিদুর রহমানের। তিনি হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলার সুবিদপুর ইউনিয়নে বলাকীপুর গ্রামের মৃত সজীব আলীর ছেলে। এ সংবাদ প্রকাশের পর সেটি সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ দেশেও ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়ে। সংবাদের সূত্র ধরে অসুস্থ তাবিদুরকে উম্ম আল কোয়েইন হাসপাতালে দেখতে যান বাংলাদেশ কনস্যুলেটের প্রথম সচিব (শ্রম) একেএম মিজানুর রহমান। এরপর শুরু হয় তাকে দেশে পাঠানোর নানা প্রচেষ্টা।
উল্লেখ্য, তাবিদুর রহমান সংযুক্ত আরব আমিরাতের উম্ম আল কোয়েইন হাসপাতালের বিছানায় গত বছরের ২১ এপ্রিল থেকে নাম পরিচয়হীনভাবে চিকিৎসাধীন ছিলেন। পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর তার পাশে দাঁড়ায় বাংলাদেশ কনস্যুলেট ও সিলেট জেলার বেশ কয়েকজন প্রবাসী। একদিকে কনস্যুলেটের তদবির ও উম্ম আল কোয়েইন প্রবাসী রুবেল আহমেদ শিবলুর প্রচেষ্টায় অবশেষে শনিবার দেশে ফিরলেন অসুস্থ তাবিদুর।
বিডি-প্রতিদিন/ ৩০ জানুয়ারি, ২০১৬/ রশিদা